গ্র্যামিজয়ী গায়িকা মারায়া ক্যারির মা ও বোন একই দিনে মারা গেছেন, যাদের কারও সঙ্গেই জীবনের এক পর্যায়ে তার সুসম্পর্ক ছিল না।
মায়ের মৃত্যুর খবর নিজেই জানিয়ে মারায়া ক্যারি বলেন, “মাকে হারিয়ে আমি ভীষণ মর্মাহত। আরও দুঃখের কথা হচ্ছে একই দিনে আমি আমার বোনকেও হারালাম।”
৮৭ বছর বয়সী মায়ের মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিশদ কিছু জানান এই গায়িকা।
তিনি বলেছেন, মৃত্যুর সপ্তাহখানেক আগেও মায়ের সঙ্গে কাটানো সময় তার কাছে ‘আশীর্বাদের মতো’।
মারায়া ক্যারির মা প্যাট্রিশিয়া ছিলেন আইরিশ-আমেরিকান বংশোদ্ভূত অপেরা সংগীত শিল্পী এবং কণ্ঠ প্রশিক্ষক।
অবশ্য মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ততটা সহজ ছিল না পাঁচবার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জয়ী মারায়া ক্যারির।
২০২০ সালে প্রকাশিত ‘দ্য মিনিং অব মারায়া ক্যারি‘ আত্মজীবনীতে সেসব আভাস দিয়ে তিনি লিখেছিলেন, “এই সম্পর্ক জুড়ে ছিল দুঃসহ যন্ত্রণা আর বিভ্রান্তি।”
মা ও মেয়ের মাঝে ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা জায়গা করে নিয়েছিল’ বলে মনে করছিলেন ৫৫ বছরের মারায়া ক্যারি।
“সাফল্যের জগতে পেশাগত ঈর্ষাও ঢুকে পড়ে একই সঙ্গে। ঈর্ষা করার মানুষটি যখন নিজের মা হয় এবং কোমল বয়সেই এসব উপলব্ধি করতে হলে ওই সময়টা দুর্বিষহ মনে হয়।”
এরপরও মায়ের প্রতি গভীর ভালোবাসার কথাও বলেছেন মারায়া ক্যারি।
আত্মজীবনীতে তিনি বলেন, “প্যাট, আমার মা … এত কিছুর পরেও আমার মনে হয় সে তার সেরাটাই দিয়েছিল যা তার পক্ষে সম্ভব। আমার দিক থেকে আমি তোমাকে সবসময় ভালোবেসে যাবো।”
২০২২ সালে এক সাক্ষাৎকারে মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে মারায়া ক্যারি বলেছিলেন, বড় হওয়ার সময় মায়ের ‘সেসব গঞ্জনা’ তাকে পীড়া দিত।
তবে গানের জগতে নিজেকে জড়ানোর পেছনে মায়ের ভূমিকা ছিল বলেও জানান মারায়া ক্যারি।
মারায়া ক্যারি ‘অল আই ওয়ান্ট ফর ক্রিসমাস ইজ ইউ’ এখন পর্যন্ত কোনো নারী শিল্পীর গাওয়া ক্রিসমাসে সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া গান।
আমেরিকার ‘বিলবোর্ড হট হানড্রেড’ তালিকায় মারায়া ক্যারি ১৯টি একক গান জায়গা নিয়ে রেকর্ড করেছে। সারা পৃথিবী জুড়ে তার গানের ২২ কোটি রেকর্ড বিক্রি হয়েছে।
‘আমেরিকান আইডল’ অনুষ্ঠানে বিচারকের আসনে বসার অভিজ্ঞতাও রয়েছ মারায়া ক্যারির।
মায়ের মতো বোনের সঙ্গেও দূরত্ব ছিল তার। বোন অ্যালিসন মারা গেলেন ৬৩ বছর বয়সে। মারা যাওয়ার আগে তিনি ‘হসপিস কেয়ার’- এ ছিলেন; যা মুমূর্ষু রোগীদের দেওয়া হয়।
নিউ ইয়র্কের পত্রিকা টাইমস ইউনিয়ন এক বন্ধুর বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে। যদিও ওই বন্ধু মৃত্যুর কারণ নিয়ে কিছু জানাননি।
দুই বোনের মধ্যেও যে সম্পর্ক ভালো চলছিল না সে কথাও উঠে এসেছে মারায়া ক্যারির আত্মজীবনীতে।
বোন অ্যালিসন এবং ভাই মরগান থেকে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন্ করার কারণ নিয়ে নিজের বইয়ে মারায়া ক্যারি বলেন, “যোগাযোগ বন্ধ করে দূরে থাকাটা মানসিক ভাবেও আমার জন্য নিরাপদ ছিল।”
অ্যালিসন অবশ্য ১২ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানির মামলা ঠুকে দিয়েছিলেন মারায়া ক্যারির বিরুদ্ধে।
মারায়া ক্যারির আত্মজীবনীকে ‘প্রতিহিংসামূলক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন অ্যালিসন।
ক্যান্সারে ভুগে ২০০২ সালে ৭২ বছর বয়সে মারা যান মারায়া ক্যারি বাবা আলফ্রেড রয় কেরি।