ভয়াবহ বন্যায় ১৩ জেলায় দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। আটকা পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। তীব্র হচ্ছে খাবার ও পানির সংকট, ঘটছে প্রাণহানিও। এমন সময়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও জাতীয় দলের ক্রিকেটার তাওহিদ হৃদয়, শরিফুল ইসলামরাও ফেইসবুকে দাঁড়িয়েছেন বন্যার্তদের পাশে।
আজ (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে বন্যার্ত মানুষদের দুর্ভোগ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে বিসিবি। বন্যার্তদের সহায়তা, ত্রাণ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে বিসিবি।
নতুন সভাপতি ও সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ বলছেন, ‘‘বর্তমানে বন্যা কবলিত মানুষদের নিয়ে আমরা ভাবছি। তাদের এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পাশে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাহায্য ও ত্রাণ দেওয়ার বিষয়ে আমরা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছি। এই সংকটাপন্ন অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য যে ধরনের সহযোগিতাই প্রয়োজন হবে, তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নিয়োজিত করতে আমরা প্রস্তুত।’’
তামিম ইকবাল নিজের ফেইসবুকের এক পোস্টে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার। তিনি লিখেছেন, ‘‘ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালীসহ দেশের আরও অনেক এলাকা বন্যার ভয়াল ছোবলে আক্রান্ত। কঠিন এই সময়ে আমাদের সবার দায়িত্ব দুর্গতদের সহায়তা করার। ব্যক্তিগতভাবে কাকে কার পছন্দ, কাকে অপছন্দ, কার কী মতবাদ, এসব ভাবার সময় এখন নয়। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে মানুষের পাশে থাকার জন্য।’’
তামিম ইকবাল আরও লিখেছেন, ‘‘ আমি নিজের দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি। যে সংস্থা ও সংগঠনগুলোকে আমার কাছে বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য মনে হয়েছে, তাদের মাধ্যমে সহায়তা করেছি। সাধ্যমতো আরও করে যাব ইনশাল্লাহ।
মানুষকে উদ্ধার করতে ও নানাভাবে যারা মাঠ পর্যায়ে নিরলস কাজ করে চলেছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। এই দেশ অসংখ্য দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এবারও আমরা সবাই একতাবদ্ধ হয়ে মানুষের জন্য কাজ করব, সবাইকে নিরাপদ ও ভালো রাখব। … স্লোগান আমাদের একটিই- মানুষ মানুষের জন্য।’’
সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘‘ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, পার্বত্য চট্টগ্রামের বেশ কিছু অঞ্চলসহ গোটা দেশ। মানবেতর জীবন পার করছে লাখো মানুষ। মহান আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করি এই বিপদ থেকে আমরা যেন দ্রুত পরিত্রাণ পাই।’’
জাতীয় দলের ব্যাটার তাওহিদ হৃদয় ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘‘কি লিখব? কি লেখা উচিৎ? নিজেকে অসহায় মনে হয় যখন সরাসরি দেশের কোনো দূর্যোগে পাশে থাকতে পারি না। বন্ধুদের পাঠিয়েছি, ওরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে, তবে আমার কষ্ট লাগছে যতটুকুই করা হবে তা কি যথেষ্ট?? তবুও করতে হবে, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু এখন না, পানি নেমে যাবার পর পর্যন্ত বন্যার্তদের পাশে থাকতে হবে। নৌকা, ঔষধ, বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার যে যেভাবে পারেন।’’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘ ব্যাপার না। আমরা জন্ম থেকেই সংগ্রাম করতে জানি, এবার ও করবো। আল্লাহ এ যাত্রায়ও আমাদের রক্ষা করবেন ইনশাল্লাহ, দূর্যোগ ঘটে গেছে, এখন পুরো বাংলাদেশ মিলে তা মোকাবিলা করার সময়। বসে থাকার সুযোগ নেই, সবাই নিজের সাধ্যমতো এগিয়ে আসি।’’
ফেনীর ক্রিকেটার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন একটা ভিডিও পোস্ট করেছেন ফেইসবুকে। সেখানে আকুতি জানিয়েছেন সাহায্যের। আর লিখেছেন, ‘‘আজকে সারাটা দিন দেখলাম সরকারিভাবে ঐরকম রেস্কিউটিম বা খাবার বন্যা কবলিত মানুষদের পাশে দেখিনি চোখে পড়েনি এই যে সত্যি অনেক দুঃখজনক । সেভ ফেনী । আমার গ্রাম এর বাড়ি তে অনেক আত্মীয় আটকে পড়ে আছে।’’
জাতীয় দলের পেসার শরিফুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘আসসালামু আলাইকুম,
দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমাদের সবাইকে এক হয়ে বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যতটুকু পারতেছি সহযোগিতা করতেছি। আপনাদের সকলের স্থান থেকে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করুন।’’