প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে হাজারো মানুষ।
এই বিক্ষোভের নাম দেওয়া হয়েছে ‘৫০৫০১’; যার অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের ৫০টি জায়গায় বিক্ষোভ থেকে ১টি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন।
শনিবারের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর ২৫০তম বার্ষিকীর সঙ্গে মিল রেখে পরিকল্পনা করা হয়। ১৭৭৫ সালের ১৯ এপ্রিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ওই যুদ্ধের সূচনা হয়।
গত নভেম্বরে বিপুল ভোটে ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত করলেও দায়িত্ব গ্রহণের তিন মাসের মধ্যে তার নানা ধরনের সিদ্ধান্তে বীতশ্রদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ।
ট্রাম্প সৃষ্ট নতুন দপ্তর সরকারি দক্ষতাবিষয়ক বিভাগের (ডিওজিই) সরকারি ব্যয় কমানোর উদ্যোগ, শুল্ক নীতি, এল সালদাভরের নাগরিক আবরেগো গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অনিচ্ছাসহ আরও অনেক ইস্যুতে ক্ষুব্ধ তারা।
বলা বাহুল্য, ট্রাম্পকে আর ক্ষমতায় দেখতে চাইছেন না তারা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউস ও ট্রাম্পের বিশেষ উপদেষ্টা ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলার শোরুমগুলোর সামনে থেকে শুরু করে অন্য আরও অনেক শহরের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতেও যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি শহরে বড় ধরনের বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল, যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘হাত গুটাও!’
এদিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার খবর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
তাদের জরিপে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের প্রতি আমেরিকানদের সমর্থন ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। বিশেষ করে শুল্ক নিয়ে বিতর্কিত পদক্ষেপ তার জনপ্রিয়তা কমতির অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আমেরিকান বহুজাতিক বিশ্লেষণ ও পরামর্শ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্যালাপের সর্বশেষ জরিপ বলছে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম প্রান্তিকে ৪৫ শতাংশ ভোটার তার কাজের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন, যা তার প্রথম মেয়াদের একই সময়ে ছিল ৪১ শতাংশ।
তবে ট্রাম্পের প্রথম প্রান্তিকের এই হার ১৯৫২-২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত সব প্রেসিডেন্টের প্রথম প্রান্তিকের গড় ৬০ শতাংশ অনুমোদনের চেয়ে কম।
রয়টার্স/ইপসোসের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, গত ২০ জানুয়ারি অভিষেকের দিন যেখানে ট্রাম্পের অনুমোদনের হার ছিল ৪৭ শতাংশ, তা কমে এখন দাঁড়িয়েছে ৪৩ শতাংশে।
একই জরিপে দেখা গেছে, দেশের অর্থনীতির বিষয়ে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেন মাত্র ৩৭ শতাংশ আমেরিকান, যেখানে অভিষেকের সময় এ হার ছিল ৪২ শতাংশ।
