দেখতে দেখতে তিন মাস পার হয়ে গেল। ৮ আগস্ট থেকে ৮ নভেম্বর। সময়ের দৈর্ঘ্য এক থাকলেও তা কিন্তু সবসময় একরকম অনুভূত হয় না। আনন্দের সময় যেমন দ্রুত চলে যায়, প্রতীক্ষার সময় তেমনি যেতেই চায় না আর যন্ত্রণার সময় সন্দেহ জাগে, সময় কি যাবে নাকি এই যন্ত্রণা স্থায়ী হবে? বাংলাদেশের রাজনীতিতে মানুষের ধারণা হয়েছে যে জনগণের জীবন থেকে যন্ত্রণার অবসান মনে হয় কখনও হবে না। কিন্তু হতাশ হলেও তো জীবন থেমে থাকে না, তাই সমস্যা সমাধানের আশায় আবার পথে নামে। কখনও ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আবার কখনও সমষ্টিগত সমস্যা সমাধানের প্রত্যাশায় গণআন্দোলনের পথে। সকল স্তরের মানুষের অংশগ্রহণে গণআন্দোলনের তীব্রতা যে কী রূপ নিতে পারে তা দেখেছে দেশের জনগণ গত ৫ আগস্ট।
মানুষের আকাঙ্ক্ষার তীব্রতা বোঝার মাপকাঠি কি আছে? স্লোগানে, দেয়াল লিখনে আর প্রতিবাদ মিছিলে মানুষের মনের আকুতির প্রকাশ ঘটে এটা ঠিক। কিন্তু তীব্রতা বুঝতে পারা যায় ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা থেকে আর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখে। সাঈদের মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার সাহস, মুগ্ধ’র আবেগময় সহযোগিতা ছাত্রদের বুকে শুধু মৃত্যুভয় উপেক্ষা করার সাহস জুগিয়েছে তা-ই নয়, স্পর্ধা তৈরি করেছে পুলিশ- বর্ডার গার্ড-আর্মিকে মোকাবেলা করার। এর সাথে যুক্ত হয়েছে শ্রমজীবীদের বিপুল অংশগ্রহণ, সন্তানের সাথে বাবা-মায়ের রাজপথে নেমে আসা। যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে মনে করা হতো সমাজবিমুখ তারা সমাজের এই দুঃসময়ে দূরে সরে থাকেনি বরং নেমে এসেছে দলে দলে, প্রাণ দিয়েছে রাজপথে। রাস্তায় থাকে যে সমস্ত ছিন্নমূল মানুষেরা তারাও জীবন দিয়েছে। শতাধিক নিহত মানুষের খোঁজ নিতে কেউ আসেনি, অর্থাৎ তাদের কেউ নেই খোঁজ নেবার মতো। তারাও জীবন দিয়েছে এই আন্দোলনে। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, গৃহী এবং গৃহহীন, বিত্তবান থেকে বিত্তহীন সকলকেই নাড়া দিয়েছে এই আন্দোলন আর সাধ্যমত সাড়া দিয়েছেন সকলেই। পুলিশ বলেছে গুলি করে থামানো যাচ্ছে না এই মানব স্রোত, রাস্তা থেকে সরানো যাচ্ছেনা ঘর ছেড়ে আসা মানুষকে। ফলে ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণআকাঙ্ক্ষার এক মহাসম্মিলন ঘটেছিল এই আন্দোলনে।
ক্ষোভের তীব্রতা যে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে সেটাও প্রত্যক্ষ করেছে দেশের মানুষ। স্থাপনা জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে অতীতে বহুবার কিন্তু এবার থানা জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে অনেক, পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশকে, ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতার বাড়িঘর ভেঙ্গে চুরে আগুন জ্বালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়েছে ছাত্র লীগকে। গত ১৫ বছর যাদের কাছে মাথা নিচু করে ছিল সেই মাস্তানদের ঘাড় ধরে বের করে দিয়েছে। চারিদিকে এতো সাহসের ঘটনা ঘটছিল যে, মানুষ ভয় পেতে ভুলে গিয়েছিল। সবচেয়ে বড় ঘটনা, মানুষ ঘেরাও করতে গিয়েছিল গণভবন, প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার কথা শুনে মানুষ তা দখল করে নিয়েছিল। লুটপাট ন্যাক্কারজনক ও অগ্রহণযোগ্য হলেও মানুষের ক্রোধের তীব্রতাটাও বিবেচনাযোগ্য। আগুনে পুড়েছে ৩২ নম্বর, ভস্মীভূত হয়েছে অনেক স্মৃতিবিজড়িত স্থান। মানুষ এসব বেদনার সাথে স্মরণ করবে তবে সাথে সাথে ভাববে, ক্রোধ কতটা তীব্র হলে মানুষ এসব জ্বালিয়ে দেয় আর এতো দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী যারা ভেবেছিল তাদেরকে কেউ সরাতে পারবেনা তারা পালিয়ে যায়।
৫ আগস্ট স্বৈরশাসকের পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর ৮ আগস্ট বিপুল আশা আর উদ্দীপনায় শপথ নিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তিনমাস অতিক্রান্ত হলো। ১৫০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু, ২২ হাজারের বেশি আহত, ৫ শতাধিক অন্ধ হয়ে যাওয়া, শত শত মানুষের পঙ্গুত্ব বরণের মাধ্যমে যে অভ্যুত্থানের বিজয় তা নিয়ে আলোচনার সময় এখন এসেছে। সমাজের নানা অংশের মানুষের নানা চাওয়া থাকলেও মানুষ মোটাদাগে যা চেয়েছিল তা হলো ফ্যাসিবাদের অবসান চাই, দুর্নীতি লুটপাট বন্ধ করো, মানুষের উপর নানা বাহিনীর নিপীড়ন বন্ধ করো, দ্রব্যমুল্য কমাও আর মানুষকে নিয়ে উপহাস এবং তামাশা বন্ধ করো। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলা প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আর ব্যক্তিকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আর সব চাওয়া কেন্দ্রিভূত হয়েছিল সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন চাওয়ার দাবিতে।
স্বাধীনতার পর ৫২ বছর পার হয়ে গেলেও জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সত্যিকারের প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন করা আজও হয়ে উঠেনি। জনগণের কাছে জবাবদিহির দায় না থাকায় টাকা, পেশিশক্তি আর রাষ্ট্রযন্ত্রের শক্তি ব্যবহার করে সংসদে একদল ‘মানি মেকার’ এবং ‘রুল ব্রেকার’ তৈরি হয়েছে। নির্বাচিত বা অনির্বাচিত উভয়ক্ষেত্রেই ভিন্নমত দমন করে তৈরি হয়েছে একদলীয় নিপীড়নমূলক শাসন ব্যবস্থা।
সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত হলেও রাষ্ট্রের তিন বিভাগের (সংসদ, নির্বাহী ও বিচার) মধ্যে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স না থাকায় ক্ষমতার পৃথকীকরণের অনুপস্থিতি ঘটেছে। সকল ক্ষমতা হয়ে গিয়েছিল এক ব্যক্তিতে কেন্দ্রীভূত। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা হয়ে গিয়েছিল দলীয় কর্মচারী বা সরকারী কর্মকর্তা। জনগণের সার্বভৌমত্ব লেখা ছিল সংবিধানের পাতায়, নাগরিক অধিকার ছিল দূরের ছায়ার মতো। মেগা প্রকল্পের মেগা দুর্নীতির দায় বহন করেছে মানুষ কিন্তু প্রশ্ন করার অধিকার ছিল না যে, কেন এই প্রকল্প, কার জন্যে প্রকল্প আর কত খরচের প্রকল্প। কেন ব্যয় ক্রমাগত বাড়ে আর কাজের মান দিন দিন খারাপ হয়? ক্ষুব্ধ জনগণ জানতে চেয়েছে তাদের ট্যাক্সের অর্থের হিসাব, নজরদারি ও জবাবদিহি কি থাকবে না?
সংবিধান একের পর এক সংশোধনীর মাধ্যমে কাটাছেঁড়া করে রক্তাক্ত করা হয়েছে আর গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিসর কমেছে। শাসকদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে, কিন্তু ‘জনগণের ইচ্ছা’ অথবা রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের সামাজিক চুক্তি (সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট) দিন দিন দুর্বল হয়েছে। সংবিধানে যা লিখিত আছে তা না মানা আর যা লিখিত নেই সেই কাজ করা যেন ক্ষমতাসীনদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, ‘আয়না ঘরে’ নির্যাতন, দুর্নীতির মাধ্যমে প্রভূত সম্পদ অর্জন, বিদেশে টাকা পাচার কোনোটাই তো সংবিধানসম্মত ছিল না। কিন্তু সংবিধান এসব থেকে ক্ষমতাসীনদের নিবৃত রাখতে পারেনি।
গণতন্ত্রের কথা বহুল উচ্চারিত হলেও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করার দৃষ্টান্ত দেখাতে পারেনি। আন্দোলন, সংসদ বর্জন ছাড়া নির্বাচন আদায় করার দৃষ্টান্তও কম। ক্ষমতা ছাড়তে না চাওয়া যেন ক্ষমতাসীন দলের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। গণতন্ত্রের ব্যাপারে মাথা না ঘামালেও পুঁজিপতিরা তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের স্বার্থে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চায়। কিন্তু এক দলের শাসনের ধারাবাহিকতা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও বিনষ্ট করে ফেলেছে। সরকার ও রাষ্ট্র একাকার হয়ে সঙ্গে নাগরিকের সামাজিক চুক্তিকে উপহাসের বিষয়ে পরিণত করে ফেলেছে।
ফলে গণআন্দোলন শুধু শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমিত থাকেনি; এই গণঅভ্যুত্থান ছিল ক্ষমতাসীনদের নিপীড়ন থেকে মুক্তির ‘সামাজিক সম্মতি’। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনে তাই শ্রমিক জনতা দলে দলে যুক্ত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী এই চাওয়া মুক্তিযুদ্ধের মৌল ভিত্তি তথা— সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ঘোষণার সাথে ছিল সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ। জনগণ দেখেছে, ক্ষমতাসীনরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে আর জনগণের সাথে করেছে প্রতারণা। ফলে মুক্তিযুদ্ধের অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা ২০২৪-এর আন্দোলনে নতুন করে জেগে উঠেছে। যার প্রকাশ ঘটেছে গ্রাফিতিতে, দেয়ালে দেয়ালে আর মাথায় বাঁধা জাতীয় পতাকায়।
অর্থনীতিতে লুণ্ঠন দেশকে সর্বনাশের কিনারায় নিয়ে এসেছিল। অর্থনীতির সব সূচকের অবনতি ঘটছিল দ্রুতহারে। দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতির সঙ্গে শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরির ফারাক বেড়েই চলছে। মূল্যবৃদ্ধির কষাঘাতে দারিদ্র্যসীমার নিচের পরিবার শুধু নয়, নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের জীবন ছিল পর্যুদস্ত।
অন্যদিকে বৈষম্যের যাঁতাকলে অধিকাংশ মানুষ জর্জরিত। নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্য-মধ্যবিত্ত জনতার কর্মসংস্থানে, আয় ও সঞ্চয়ে বড় ধরনের আঘাত পড়েছে। বেকারত্ব যুবকদের জীবনকে অনিশ্চিত ও বেপরোয়া করে তুলেছিল। সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে ভাঙন ধরে বিপুল সংখ্যক মধ্যবিত্তকে দরিদ্রের কাতারে নামিয়ে এনেছিল। খাদ্যপণ্যের দাম বাড়লেও তার সুফল কৃষক পায় না, পায় মধ্যস্বত্বভোগীরা। কৃষকের দিন আনি দিন খাই বা ঋণ করেই জীবন যাপন করতে হতো। মানুষের হাতে নগদ টাকায় টান পড়েছে। আর দেশি-বিদেশি ঋণে জর্জরিত সরকার তার দায় চাপিয়ে দিয়েছিল জনগণের কাঁধে। অসম শর্তে ঋণ আর তার শর্তের জালে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির দাম বৃদ্ধি মানুষের জীবনে সংকটকে বাড়িয়ে তুলেছিল। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ও সরবরাহে টান পড়েছিল, বাজারে দেখা দিয়েছিল তারল্য সংকট। বিলাসিতা আর বিপণ্ন দশার এক অদ্ভূত সহাবস্থান তৈরি হয়েছিল। রাজনৈতিক দমনপীড়নে অর্থনৈতিক সংকট কাটানো যে যায় না তা স্পষ্ট হয়েছিল দিনে দিনে। ফলে সব সমস্যার ফলে সৃষ্ট ক্ষোভ সরকারের বিরুদ্ধে এবং সরকারের পদত্যাগকে অনিবার্য করে তুলেছিল। কিন্তু এতোটা ক্ষমতা মদমত্ত সরকার তার সকল সাঙ্গপাঙ্গসহ দেশত্যাগ করবে এতটা ভাবা যায়নি।
কিন্তু সত্য কল্পনাকেও হার মানায়। শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এখন প্রশ্ন, ব্যক্তি পালালেই কি ব্যবস্থা পালায়? এখন তো পলাতকার ছায়ার সঙ্গে লড়াই করে মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা যাবে না। প্রত্যাশা পূরণে তিন মাস যথেষ্ট সময় নয় কিন্তু শুরু করার জন্য একেবারে কম সময়ও নয়। মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইন শৃঙ্খলা স্বস্তিদায়ক করা আর মানুষের মনে ভরসা দেওয়া যে তাদের পাশে সরকার আছে, এটা এই মুহূর্তের কাজ। অভ্যুত্থানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি পাওয়ার ব্যবস্থা তো করতে হবে, তার জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি কর্মপরিকল্পনা ও রোড ম্যাপ প্রণয়ন করে যত দ্রুত সম্ভব দেশে একটি সাধারণ নির্বাচন করার ব্যবস্থা করতে হবে। গত সরকারের আমলে যে অত্যাচার, অনাচার, দুর্নীতি হয়েছে তার বিচারের উদ্যোগ নিতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেওয়া, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত হওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইন করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে দেশ ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে গণতান্ত্রিক সরকারের পথে একটি নতুন যাত্রা শুরু করবে।
এটা তো ঠিক রাষ্ট্রকাঠামোর পুঞ্জীভূত জঞ্জাল দ্রুত সরানো যাবে না। এই জঞ্জাল সরানোর জন্য এবং ভবিষ্যতে যাতে ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা না যায়, ক্ষমতা কাঠামোর সকল স্তরে জবাবদিহি নিশ্চিত থাকে, সে জন্য সংবিধানে কিছু সংশোধনী অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু বিশাল কাজের ফিরিস্তি তৈরি করে সময়ক্ষেপণ করা যেমন সন্দেহ তৈরি করবে তেমনি সমাজে অস্থিরতারও জন্ম দেবে। পাশাপাশি এতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যেও দমনমূলক মানসিকতার জন্ম দিতে পারে। যা বিপজ্জনক হয়ে উঠার আশঙ্কা তৈরি করবে।
তিনমাসে ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ হয়নি। বকেয়া মজুরি আদায়ের জন্য শ্রমিকদের বিক্ষোভ করতে হচ্ছে, দখলবাজীর হাত বদল হয়েছে, সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা সৃষ্টির ঘটনা ঘটছে, বিজয়ী হয়েছি এই মনোভাব থেকে নিয়ম বহির্ভূত কাজ করার প্রবণতা বেড়েছে। এগুলো ভালো দৃষ্টান্ত নয়। কিন্তু মানুষ আশা করে, এই সরকার জনগণের পক্ষে থাকবে, শ্রমিকের উপর দমনপীড়ন চালাবে না, কৃষকের পাশে থাকবে, সাধারণ মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান রক্ষা করবে। মানুষের প্রত্যাশা যেন মার না খায় এই দায়বোধ থেকে জনগণের ন্যূনতম চাওয়া পূরণে দেরি করা চলবে না।
লেখক: সহ-সাধারণ সম্পাদক, বাসদ।
ইমেইল: [email protected]