সচিবালয় এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবনের আশপাশে সব ধরনের গণজমায়েত, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
রবিবার রাতে সচিবালয়ে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান স্বাক্ষরিত এক গণ-বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্সের ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের (যমুনা) আশপাশের এলাকায় যেকোনো প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নানা দাবি নিয়ে মাঠে নামে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। এসময় নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে পথে নামে আনসার বাহিনীও। চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন আনসার সদস্যরা।
এর ধারাবাহিকতায় কয়েক হাজার আনসার সদস্য রবিবার সকাল ৮টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ শুরু করেন। তাদের সমাবেশের কারণে তোপখানা রোড থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সড়ক বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
আন্দোলনরত কয়েক হাজার আনসার সদস্য দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয় ঘেরাও করার পর তাদের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পরে আনসার সদস্যদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন করার কথা জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে তারপরও চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখে আনসার সদস্যরা। তারা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়ায় কেউ সচিবালয়ে ঢুকতে বা বের হতে পারছিলেন না।
এমন পরিস্থিতিতে আনসার সদস্যরা সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামসহ অনেককে আটকে রেখেছেন– এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন।
পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকায় গেলে আনসার সদস্যদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আনসার সদস্য, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।