সুন্দরী নারীদের দিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলার অভিযোগে ঢাকার ধানমণ্ডি থানায় করা প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী মো. দেওয়ান সমিরের (৫৮) আরও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
সমির সানজানা ম্যান পাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক।
মঙ্গলবার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ. আজহারুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেয়।
সমির দেওয়ানকে আদালতে হাজির করে আরও সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আক্তার মোর্শেদ।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
সমিরের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সমিরের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল ধানমন্ডি থানায় করা একই মামলায় সমিরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছিল আদালত। তার আগে ১২ এপ্রিল একই ধরনের অভিযোগে ভাটারা থানায় করা মামলায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। সবমিলিয়ে দুই মামলায় তাকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মেঘনা আলম, দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক/প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ পন্থায় অর্থ আদায় করে আসছে। দেওয়ান সমির KAWAII Group নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক। এর আগে মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল।
মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেঘনা ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর মিস আর্থ বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। তারপর মডেলিংয়ে যুক্ত ছিলেন তিনি।
গত ৯ এপ্রিল রাতে মেঘনাকে ঢাকার বসুন্ধরায় তার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ১০ এপ্রিল রাতে তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেওয়া হয়।
মেঘনা গ্রেপ্তারের সময় ফেইসবুক লাইভে এসে অভিযোগ করেন, মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের রাষ্ট্রদূত প্রভাব খাটিয়ে তার বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়েছেন।
মেঘনাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ২৪ ঘণ্টায়ও তা স্বীকার না করা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ওঠে। এরপর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্বীকার করেন, মেঘনাকে তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়াটি সঠিক ছিল না।
মেঘনার আটকাদেশ চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন তার বাবা বদরুল আলম।
এ আবেদনে ১৩ এপ্রিল মেঘলা আলমকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় হেফাজতে রাখা, বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাকে কারাগারে পাঠানোসহ পুরো প্রক্রিয়া কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং তাকে কেন মুক্তি দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত।
তার চারদিন পর প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় মেঘনাকে। মেঘনা আলম আটকের পরদিন ১০ এপ্রিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির হাতে আটক হন দেওয়ান সমির।