পাকিস্তানে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর ভারত অভিযানে বাংলাদেশ। দুটি টেস্টের পাশাপাশি তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের সাফল্যে টেস্ট দলে বড় কোনো পরিবর্তনের সুযোগ নেই। এমনকি ছাঁটাইয়ের শঙ্কায় থাকা কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পর্যন্ত ‘লাইফলাইন’ পেয়ে টিকে গেছেন এই যাত্রায়।
টেস্ট দলে বড় পরিবর্তন না হলেও টি-টোয়েন্টিতে নিশ্চিতভাবে বদলে যাবে বাংলাদেশ। পরের বিশ্বকাপের দল গড়তে ফাইনাল জিতেই অবসর নিয়েছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তি বিরাট কোহলি,রোহিত শর্মা ও রবীন্দ্র জাদেজা। কিন্তু বাংলাদেশের সিনিয়র কোনো ক্রিকেটার অবসর নেননি।
সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাদের তাই চাইলেই বাদ দিতে পারবেন না নির্বাচকরা। তাদের বাদ দেওয়ার অর্থ সেই ফরম্যাটে ক্যারিয়ার শেষ। ভারত সফরের টি-টোয়েন্টি দলে এই দুজন তাই থাকছেন।
মাহমুদউল্লাহ গত বিশ্বকাপে ফিনিশিংয়ে ব্যর্থ ছিলেন। ৭ ম্যাচে রান মাত্র ৯৫, স্ট্রাইক রেট ৯৪.০৫। আধুনিক টি-টোয়েন্টিতে ৬-৭ নম্বরে নেমে এমন ব্যাটিংয়ের জায়গা নেই। ভারতের চ্যালেঞ্জিং পিচেও মাহমুদউল্লাহ ব্যর্থ হলে পরের বিশ্বকাপের জন্য দরজাটা বন্ধ হয়ে যেতে পারে তার। জাকের আলী বিশ্বকাপে ৪ ইনিংসে ৭৬.০৮ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন মাত্র ৩৫ রান। হাতে বড় শট থাকলেও বিশ্বকাপে তা দেখাতে ব্যর্থ হন। ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দলে তাকে রাখতে ভাবতে হবে নির্বাচকদের।
ফিনিশিংয়ে অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন হতে পারতেন বিকল্প। বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়লেও অস্ট্রেলিয়া সফরে এইচপি দলে ডাক পেয়েছিলেন সাইফউদ্দিন। ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নিয়ে ওই সফরের পর পাকিস্তানেও “এ” দলের হয়ে খেলতে পারেননি।
শেষ দিকে ব্যাটিংয়ের জন্য সেরা বিকল্প হিসেবে দলে ফিরতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বিশ্বকাপে শেখ মেহেদীর জন্য বাদ পড়েছিলেন মিরাজ। পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতা মিরাজের্ টি-টোয়েন্টিতে স্ট্রাইক রেট ১২০-এর কাছাকাছি। ২০১৮ সালে ভারতের বিপক্ষে শেষ দিকে ৭ বলে ১৯* রানের মতো কার্যকরী ইনিংস খেলতে জুড়ি নেই তার। তাই ভারত সফরের দলে এই পরিবর্তনটা আনতেই পারেন নির্বাচকরা।
ফাস্ট বোলিং নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলামরা এই ফরম্যাটের অন্যতম সেরা পেসার। স্পিনে রিশাদ হোসেনও ভরসার নাম। বিশ্বকাপে আলো ছড়িয়ে তিনি ডাক পেয়েছেন বিগ ব্যাশে।
বাংলাদেশের মাথা ব্যথা ব্যাটিং নিয়ে। বিশ্বকাপে ব্যর্থ ছিলেন সবাই। আর বিশ্বকাপ শেষে এই ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি কেউ। তাই ব্যাটারদের নির্বাচন করাটা চ্যালেঞ্জের নির্বাচকদের জন্য।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দুই ওপেনারেরই স্ট্রাইক ছিল ১০০’র কম। লিটন দাস ৯৩.২৮ স্ট্রাইক রেটে ৭ ম্যাচে করেছিলেন কেবল ১৩৯ রান। আর তানজিদ হাসান তামিম ৯৬.২০ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন মাত্র ৭৬ রান।
বিশ্বকাপ শেষে অস্ট্রেলিয়া সফরে এইচপি দলের হয়েও তেমন কিছু করতে পারেননি তানজিম হাসান তামিম। ৮ ম্যাচে তার স্কোরগুলো ১৭, ২৮, ১, ১৮, ১৮, ১, ১৬ ও ৩৫। একই সফরে থাকা ওপেনার জিসান আলম নজর কেড়েছেন কিছুটা। তাসমানিয়ার সঙ্গে ২৩ বলে ১৬৫.২১ স্ট্রাইক রেটে ৩৮ আর ক্যাপিটাল টেরিটরির বিপক্ষে খেলেছিলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের ইনিংস।
ভারত সফরের ক্যাম্পে থাকায় জিসানকে নিয়ে একটা বাজি খেলতেই পারেন নির্বাচকরা। বিশেষ করে বিশ্বকাপে যেখানে ২ ম্যাচে কেবল ১০ রানই করেছিলেন সৌম্য সরকার। তাছাড়া অস্ট্রেলিয়া সফরে থাকা পারভেজ হোসেন ইমনও আছেন আলোচনায়। ৮ ম্যাচে একটি ফিফটি ছিল তার। তবে হতাশ করেছেন আফিফ হোসেন। তার ইনিংসগুলো ৫, ০, ১০, ২, ১৭, ৪, ২২ ও ১৮।
আফিফের চেয়ে দলে ফেরার দৌড়ে এগিয়ে শামীম হোসেন। ৮ ইনিংসের ৪টিতে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তার ইনিংসগুলো ২৫*, ১৩, ৪২, ১*, ৪৪*, ১৬, ৪১* ও ৪। হাতে পর্যাপ্ত বিকল্প না থাকায় শামীম তাই আরও একটা সুযোগ পেতেই পারেন।