Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

মেট্রোরেল : ক্ষতির হিসাব জানতে প্রতিবেদনের অপেক্ষা

কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনের দৃশ্য। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ভাংচুরের পর কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of কমল জোহা খান

কমল জোহা খান

সরকার পতনের আন্দোলনের মধ্যে গত ১৮ জুলাই মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে হামলার পর বন্ধ রয়েছে ঢাকার মেট্রোরেলের চলাচল। কিন্তু প্রায় এক মাস হতে চললেও এখনও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব চূড়ান্ত করতে পারেনি ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্র্যানজিট কোম্পানি (ডিএমটিসিএল)।

ডিএমটিসিএলের বেশ ক’জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাংচুরে স্টেশন দুটির টিকেট কাটার মেশিন, অফিস রুম, টিকেট পাঞ্চ করার গেট, কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু যন্ত্রপাতি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে মেট্রোরেল ও এর চলাচলের ভায়াডাক্ট অংশের কোনও ক্ষতি হয়নি।

গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’কর্মসূচি চলার সময় মিরপুরের-১০ নম্বর গোলচত্বরে থাকা পুলিশ বক্সে আগুন ধরানো হয়। আগুনের ধোঁয়া পুলিশ বক্স সংলগ্ন মেট্রোরেল পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়।

সেদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জননিরাপত্তার স্বার্থে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেয় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ। পরদিন ১৯ জুলাই শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মিরপুর-১০ নম্বর ও কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা হয়। সেদিন রাতভর হামলাকারীরা স্টেশন দুটিতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

হামলার পর ডিএমটিসিএলের পক্ষ থেকে আরও কিছু তথ্য জানা যায়। প্রাথমিকভাবে তারা জানায়, মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশনের ই-সিস্টেমের পুরোটাই ধ্বংস হয়ে গেছে। এ সিস্টেম পুনরায় সচল করতে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা লাগতে পারে। কাজীপাড়া স্টেশনের ই-সিস্টেম অর্ধেকের বেশি নষ্ট হয়ে গেছে। এই স্টেশনের ই-সিস্টেম ঠিক হতেও ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

এছাড়া দুই স্টেশনে থাকা পাঞ্চ মেশিন, ভেন্ডিং মেশিন, বিভিন্ন ডিভাইস, কম্পিউটারসহ আরও যেসব জিনিসপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাও ঠিক করতে প্রায় ২০০ কোটি টাকা লেগে যেতে পারে বলে হিসাব দেওয়া হয়।

ডিএমটিসিএলের সেই হিসাবে মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

ডিএমটিসিএল ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে গত ২২ জুলাই মেট্রোরেল লাইন-৬-এর অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়ার নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

ডিএমটিসিএলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক সোমবার সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র এখনও পাননি তারা।

“তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। তবে কমিটি নানা কারণে অফিস আদালত বন্ধ থাকায় তদন্তে ১০ কার্যদিবস সময় পায়নি। তাদের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব পাব।”

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্টেশনে হামলার ক্ষতি, যাত্রী পরিবহন বাবদ ক্ষতির হিসাবও যুক্ত করা হবে। সেজন্য তদন্ত কমিটি মেট্রোরেলের বিভিন্ন বিভাগের কাছ থেকে ক্ষতির হিসাব জানতে একাধিক সাব কমিটি গঠন করেছে। বেশ কিছু সাব কমিটি তাদের প্রতিবেদন এরইমধ্যে জমা দিয়েছে। সবগুলো প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।    

মেট্রোরেল বন্ধ হওয়ার আগে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন লাখ যাত্রী বহন করত। এতে তাদের আয় ছিল প্রায় দেড় কোটি টাকা। যাত্রী বহন না করায় ১৮ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কোটির টাকার ক্ষতি হয়েছে মেট্রোরেলের।

প্রতিদিন দেড় কোটি টাকা আয় হলেও মেট্রোরেল এখনও লাভের মুখ দেখেনি। দৈনিক ৪ লাখ ৫২ হাজার যাত্রী বহনের ক্ষমতার মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে ট্রেন, সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মীদের বেতন বাবদ আরও বড় অঙ্ক ব্যয় করতে হয়। তাই লাভের মুখ দেখতে হলে তাদের প্রতিদিন কমপক্ষে দুই কোটি টাকায় আয় করতে হবে। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত