Beta
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

মিরনজুল্লাহ কলোনিতে হামলা মামলা উচ্ছেদের প্রতিবাদ

ss-mironjulla-13-7-24
[publishpress_authors_box]

ঢাকার বংশালের মিরনজুল্লাহ কলোনি থেকে হরিজন সম্প্রদায়কে উচ্ছেদ অভিযান ও তাদের ‍উপর নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উৎযাপন পরিষদ। হরিজন ঐক্য পরিষদ ও নাগরিক সমাজও এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

সমাবেশে হরিজন সম্প্রদায়ের উপর হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের ‘ষড়যন্ত্র এবং বিদ্বেষমূলক’ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো হয়। এছাড়া ডিএসসিসির ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আউয়াল হোসেনের দায়ের করা সবগুলো মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও তোলা হয় সমাবেশে।

মিরনজুল্লাহ হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৩ জুন উচ্ছেদ অভিযানের ওপর এক মাসের জন্য স্থিতাবস্থা (স্ট্যাটার কো) জারি করেছিল হাইকোর্ট। পাশাপাশি বসবাসের বিকল্প ব্যবস্থা না করে হরিজনদের উচ্ছেদ না করতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

পরে হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আপিল বিভাগে আবেদন করে। সেই আবেদন আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা অবস্থাতেই মিরনজুল্লাহ হরিজন কলোনিতে নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেয় ডিএসসিসি।

১০ জুলাই মিরনজুল্লাহ কলোনির ৬০ জন হরিজন ও ৬ জন মুসলিম পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে ঘর বুঝিয়ে দিতে যান ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান। তার সঙ্গে ছিলেন ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আউয়াল হোসেন ও তার লোকজন। তারা ঘর বুঝে নিতে না চাইলে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। পাল্টা প্রতিরোধ করে হরিজনরাও।

১০ জুলাই মিরনজুল্লাহ হরিজন কলোনিতে সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, কলোনিবাসীদের উচ্ছেদ করে সেই জমিতে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মানের পরিকল্পনা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। বহুদিন থেকেই এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১০ জুন বিনা নোটিশে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। তাতে বাস্তুহারা হয়ে যায় কলোনির ৫০টির বেশি পরিবার। ঘটনার পর থেকেই এলাকার মানুষদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মিরনজুল্লাহর ইতিহাস প্রায় ৪০০ বছরের বেশি পুরানো। যাদের অমানবিক পরিশ্রমে ফলে এই নগর আজকের তিলোত্তমা ঢাকায় পরিণত হয়েছে তারাই আজ এই নগরে বহিরাগত-অস্থায়ী বাসিন্দার তকমা পাচ্ছে, এমন মন্তব্যও করেন বক্তারা।

তারা আরও বলেন, উচ্চ আদালতের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ উপেক্ষা করে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে। এছাড়া স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে দুইশতাধিক ক্যাডার বাহিনী নিয়ে কলোনিতে ঢুকে এক চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এমনকি ডিএসসিসি মেয়র এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কলোনিতে মাদক ব্যবসা চলে, এরা আমার কর্মচারীদের জিম্মি করে রেখেছে, এরা বহিরাগত ইত্যাদি। কলোনির ছাত্র-যুবককে সন্ত্রাসী ও কিশোরগ্যাং আখ্যায়িত করে অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন। মেয়রের এ ধরনের বক্তব্য অতিদ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।

এ সময় চার দফা দাবি পেশ করেন বিক্ষোভকারীরা। তারা বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর আউয়াল হোসেনের দায়ের করা সবগুলো মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সব ধরনের উচ্ছেদ পরিকল্পনা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে। এই ভূমি মিরনজুল্লাহর বাসিন্দাদের, জমির মালিকানা তাদের নামে দলিলে তুলে দিতে হবে।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ পূজা উৎযাপন পরিষদের সাংবাদিক বাসু দেব ধর, নাগরিক সমাজের অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণ লাল, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত