গণতন্ত্র নস্যাৎ করতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মনে করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের ওপর নতুন বিপদের শঙ্কাও দেখছেন তিনি। সেইসঙ্গে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল যখন দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন, তখন নির্বাচন সংস্কারে কাজ শুরু করেছে সরকার গঠিন নির্বাচন সংস্কার কমিটি। সোমবারই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়েছেন কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
কবে নাগাদ আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনও সময় বলা না হলেও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।
মহিলা দলের আলোচনায় মির্জা ফখরুল বলেন, “শেখ হাসিনার জঞ্জাল দূর করে দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন। কারণ নির্বাচিত সরকারই শ্রেষ্ঠ সরকার, কেননা জনগণ তাদের নির্বাচিত করে।”
তিনি মনে করেন, নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই দেশের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা উচিত।
নির্বাচন না দিলে, এই সরকারকেও দীর্ঘ দিন মানবে না মানুষ : আব্বাস
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের বিষয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “বুকে চেপে থাকা দানব সরে গেছে, কিন্তু আমাদের সজাগ ও সচেতন হতে হবে। বিপদ শেষ হয়নি, নতুন করে বিপদ আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিএনপির ওপর সবসময় আঘাত এসেছে। আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে। বহু চেষ্টা করে কেউ বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি।”
নারীরা বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি বলেও এসময় মন্তব্য করেন তিনি।
গত ১৫ বছরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তারা ১৫ বছর ধরে জনগণের ওপর নির্মম নির্যাতন করেছে, দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে। আমাদের ৬০ লাখ নারী-পুরুষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ইলিয়াস আলীসহ ৬০০’র বেশি নেতাকর্মীকে গুম করেছে তারা।”
দলীয় নেতা-কর্মীদের সর্তকতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্রকে বিনির্মাণ করব।”
৭ নভেম্বর বিপ্লবের নায়ক হিসেবে সাধারণ সিপাহী ও জনতাকে চিহ্নিত করেন মির্জা ফখরুল। কথা বলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সম্পর্কেও।
তিনি বলেন, “সেদিন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সামনে না এলে বাংলাদেশের কী হতো? এ কথা বলা যায় না। হয়তো এ দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো। তিনি নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
“খালেদা জিয়া ওপর থেকে চেপে এসে ক্ষমতায় বসেননি। তিনি জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন।”
জাতীয়বাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহাম্মেদ।