গায়ের রং কালো হওয়ায় বলিউডে যে অবজ্ঞা ও উপেক্ষা পেয়েছেন, দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার পাওয়ার পর আবেগপ্রবণ হয়ে সেই গল্পই মঞ্চে শোনালেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী।
মঙ্গলবার ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তার হাতে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার তুলে দেন।
এসময়ে ৭৪ বছর বয়সী অভিনেতা নিজের বক্তৃতার চলচ্চিত্র শিল্পে একজন কালো বর্ণের অভিনেতার জন্য বলিউড কতটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল সে ইতিহাস তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের বরিশালেরে ছেলে মিঠুন চক্রবর্তী ভারত সরকারের তৃতীয়-সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণও পেয়েছেন।
পুরস্কার অনুষ্ঠানে মিঠুন বলেন, “আমাকে বলা হয়েছিল, আমাকে বলা হয়েছিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আমার মতো কালো চামড়ার অভিনেতাদের জন্য কোনও জায়গা নেই। তারা আমাকে যতটা সম্ভব অপমান করেছে।”
এসময় তিনি আবেগ সামলাতে না পেরে যোগ করেন, “তিনি তার চেহারা সম্পর্কে ঈশ্বরের কাছে অভিযোগ করবেন।”
তবে হতাশ না হয়ে জেদ ধরে মিঠুন বলিউডে প্রতিষ্ঠা পেতে বেছে নিয়েছিলেন সম্পূর্ণ অন্য এক কৌশল। জোর দেন নিজের নাচের দক্ষতার ওপর।
ভারতের আসল ‘ডিসকো ড্যান্সার’ হিসেবে পরিচিত এ অভিনেতা আরও বলেন, “আমি তখন নাচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি চেয়েছিলাম, লোকেরা আমার মুখ বা গায়ের রঙ নয়, আমার পায়ের দিকে তাকাবে- রং কো ভুলকে। আমি পা দিয়ে নাচলাম আর মানুষ আমার রঙ দেখতে ভুলে গেল।”
তিনি চলচ্চিত্র শিল্পে অভিনেতাদের কখনও স্বপ্ন দেখা বন্ধ না করার পরামর্শ দেন।
মিঠুন বলেন, “আমি যদি এটি করতে পারি যে কেউই পারবে।”
বক্তৃতায় মিঠুন এর আগে তার অন্যান্য জাতীয় ও খ্যাতনামা পুরস্কার পাওয়ার পর নিজের ভেতরের পরিবর্তন নিয়েও কথা বলেন।
এসময় তিনি নিজের আত্মসমালোচনা করে বলেন, ওইসব পুরস্কার পাওয়ার পর কীভাবে তার ভেতরে অহংকার তৈরি হয়েছিল।
তিনি বলেন, পুরস্কার পাওয়ার দম্ভে তিনি মার্কিন সুপার স্টার আল-পাচিনোর মতো আচরণ শুরু করেছিলেন। তবে শিগগিরই নিজের ভুল শুধরে নিয়ে সঠিক পথেও ফিরে আসেন। কেননা, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ওরকম আচরণ করলে তিনি আর কাজ পাবেন না।
মিঠুন তার বক্তৃতা শেষ করার ঠিক আগ দিয়ে বলেন, “তুমি ঘুমাও, কিন্তু তোমার স্বপ্নকে কখনো ঘুমাতে দিও না।”