Beta
শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪

জুলাইয়ে মোবাইলে লেনদেন কমেছে

ss-MFS-BD-140524
Picture of সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

সকাল সন্ধ্যা প্রতিবেদন

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মোবাইলে আর্থিক লেনদেন কমেছে। এই মাসে ১ লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

আগের মাস জুনে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল, যা ছিল একক মাসের হিসাবে সবচেয়ে বেশি। এর আগে কখনোই এক মাসে এত টাকা লেনদেন হয়নি।

এর আগে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল গত মার্চ মাসে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

হাতের মোবাইল ফোনই এখন ব্যাংক। হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিই হয়ে উঠেছে সব ধরনের লেনদেনের অপরিহার্য মাধ্যম। এসব লেনদেনের হিসাব খুলতে কোথাও যেতে হয় না। গ্রাহক নিজেই অনায়াসে নিজের হিসাব খুলে লেনদেন করতে পারছেন।

মোবাইল ফোনের সাহায্যে অন্যকে টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন পরিষেবা ও কেনাকাটার বিল পরিশোধ, টিকেট কেনাসহ কত সেবা যে মিলছে, তা এক দমে বলা খুবই কঠিন। সব মিলিয়ে বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায়ের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে আর্থিক স্বাধীনতা ও স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে।

জুলাই মাসে মোবাইলে লেনদেন কমার কারণ জানতে চাইলে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলেন, প্রতি বছরই দুই ঈদের মাসে মোবাইলে লেনদেন বাড়ে। ১৭ জুন দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপিত হয়। ঈদে মানুষের বাড়তি টাকার প্রয়োজন হয়; কেনাকাটাও বেশি করে। সে কারণেই লেনদেনে রেকর্ড হয়েছিল। জুলাই মাসে স্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে।

চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা।

এপ্রিল ও মে মাসে লেনদেন হয় যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।

গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা; নভেম্বরে হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত অক্টোবর মাসে দেশে মোবাইল ফোনে এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। তার আগের মাস সেপ্টেম্বরে এক লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়।

আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ চার মাসেই (মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) মোবাইলে লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে লাখ কোটি টাকার নিচে- ৯৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকায় নেমে আসে।

এরপর নয় মাসেই (গত বছরের আগস্ট থেকে জুন) লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। প্রতিদিনের গড় লেনদেন ছিল ১ হাজার ৭০ কোটি টাকা।

এভাবেই বাংলাদেশে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস ব্যবহার প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।

গ্রাহক ২৩ কোটি ৩১ লাখ

মোবাইল লেনদেনে গ্রাহক সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। জুলাইয়ে সেই গ্রাহক প্রায় চার গুণ বেড়ে ২৩ কোটি ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৫ তে দাঁড়িয়েছে।

একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস সেবায় হিসাব খুলতে পারেন। খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ঠিক কত নাগরিক এমএফএসের আওতায় এসেছেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি পরিবারেই সেবাটি পৌঁছে গেছে, এটা বলা যায়।

এভাবেই ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে মোবাইল ব্যাংকিং। কেবল টাকা পাঠানোই নয়, দেশের অর্থনীতিতে প্রতি মুহূর্তে গতি সঞ্চার করে চলেছে মোবাইল ব্যাংকিং। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবামূল্য পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ প্রবাসী-আয় বা রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন অন্যতম পছন্দের মাধ্যম।

প্রতিদিন নতুন নতুন সেবা যোগ হচ্ছে। এই সেবার হাত ধরেই দেশে আসছে ‘ডিজিটাল ব্যাংক’। দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও ডাক বিভাগের মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ ‘ডিজিটাল ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। নগদ ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত লাইসেন্স পেয়েছে।

বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত