জুনে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পর বৃহস্পতিবার ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে খেলতে নামে বাংলাদেশ। ঘরোয়া ফুটবল মৌসুম শেষে দীর্ঘদিন যে খেলার মধ্যে ছিলেন না জামাল ভূঁইয়ারা, ভুটানের বিপক্ষে এই প্রীতি ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্সে বেশ ভালোভাবেই বোঝা গেছে।
থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ১-০ গোলে জয় পেয়েছে। ভুটানের বিপক্ষে ২-০ সিরিজের ফিফা প্রীতি ফুটবলের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি বাংলাদেশ খেলবে আগামী রবিবার।
এদিন ম্যাচের শুরুতে শেখ মোরসালিনের একমাত্র গোলে ভুটানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু সত্যিকার অর্থে মন ভরানো ফুটবল উপহার দিতে পারল কোথায়?
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাঠের উচ্চতা ভালো ফুটবল উপহার না দিতে পারার অন্যতম কারণ হতে পারে। পাশাপাশি দ্রুতগতির টার্ফে না খেলে অভ্যস্ত বাংলাদেশের ফুটবলাররা পারফরম্যান্সে হতাশ করেছে। এমনকি প্রথম গোলটি বাদ দিলে পোস্টে সেই অর্থে কোনও শট রাখতে পারেননি ফাহিম, মোরসালিন, রাহুলরা।
ভুটানের বিপক্ষে অতীত পরিসংখ্যানে বরাবরই ভালো বাংলাদেশ। ১৪ ম্যাচের মুখোমুখিতে ১১টিতে জয়। ২টি ড্র ও ১ হার। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আরেকটি জয় এদিন তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
পঞ্চম মিনিটেই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক দেনদুপ শেরিংয়ের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন শেখ মোরসালিন।
ভুটানকে সেই অর্থে যদিও চেপে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ, কিন্তু পঞ্চম মিনিটে গোলরক্ষকের ভুলে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগালেন শেখ মোরসালিন। এগিয়ে থাকার স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে গেল হাভিয়ের কাবরেরার দল।
অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার ও নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে বাইরে রেখে ভুটান ম্যাচের একাদশ সাজান হাভিয়ের কাবরেরা। জামালকে কোচ মাঠে নামান ৭৩ মিনিটে। কিন্তু তিনি নেমেও ম্যাচের স্কোর লাইন দ্বিগুণ করতে পারেননি।
পঞ্চম মিনিটে ভুটানের গোলরক্ষক তালগোল পাকালে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কর্নারের কাছাকাছি থেকে রাকিব হোসেনের ক্রস গ্লাভসে জমাতে পারেননি দেনদুপ। হাত ফসকে বেরিয়ে যাওয়া বল মোরাসালিনের গায়ে লেগে পোস্টের দিকে ছুটতে থাকে, দ্রুত টোকায় বাকিটুকু সারেন এই ফরোয়ার্ডই।
১৮ মিনিটে সতীর্থের লং ক্রস গতি দিয়ে সাদ উদ্দিনকে পেছনে ফেলে নিয়ন্ত্রণে নেন নিমা ওয়াংদি। কিন্তু তার শট পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন মিতুল মারমা। কর্নারে ইয়েশে গাইয়েতলসেনের হেড দূরের পোস্ট ঘেঁষে বরিয়ে যায়।
এরপর দুই দলের খেলায় গতি কমে যায় আরও। বিরতির আগ পর্যন্ত কোনো দলই পারেনি তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে। তবে এগিয়ে থাকার স্বস্তি সঙ্গী থাকে বাংলাদেশের।
যদিও বিরতির সময় ভুটানের এক স্ট্রেচার বয় মাঠের মধ্যে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। মূলত মাঠে শুয়ে থাকা রাকিবকে আনতে গিয়েছিল যে স্ট্রেচার বয় তাদের একজন ওই কর্মী। অবস্থার অবনতি হলে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিরতির পর দুই দলই যেন পরিকল্পনাহীন ফুটবল খেলেছে। অবশ্য ৫২ মিনিটে ভুটানের দারুণ একটা আক্রমণ ক্লিয়ার করে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৬২ মিনিটে ফাহিমকে তুলে রাহুলকে নামান কোচ। কিন্তু রাহুল নেমেও ম্যাচের গতি বাড়েনি সেভাবে।
বরং বারবার মাঠে শুয়ে সময় নষ্ট করেছেন বাংলাদেশের একাধিক ফুটবলার। যা দেখতে খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছে। একবার তো ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ বল থ্রো ইনে দেরি করায় হলুদ কার্ডও দেখেছেন রেফারির কাছ থেকে। বাংলাদেশের ফুটবলারদের শরীরি ভাষা দেখে মনে হয়েছে যেন কোনও রকমে ম্যাচ শেষ করতে পারলেই বাঁচেন।
বাংলাদেশ দল : বাংলাদেশ একাদশ: মিতুল, তপু, শাকিল, সাদ, বিশ্বনাথ, হৃদয়, সোহেল রানা (সি), সোহেল রানা (জু), ফাহিম, মোরসালিন, রাকিব।