মায়ের গয়নায় স্বপ্নপূরণ, টেস্ট ক্যাপ উৎসর্গ বাবাকে

ভারতের বেশিরভাগ তরুণই চায় শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলি বা জাসপ্রিত বুমরাহদের মত ক্রিকেটার হতে। চাইতেন ধ্রুব জুরেলও। উত্তর প্রদেশের আগ্রায় জন্ম নেওয়া ধ্রুবর স্বপ্ন পূরণে মা বিক্রি করে দেন সোনার গয়না।

কারগিল সীমান্তে ভারতের হয়ে যুদ্ধ করা ধ্রুবর বাবা নিম সিংয়ের শুরুতে আপত্তি ছিল এতে। তবে হার মানতে হয় ধ্রুবর জেদের কাছে। শেষ পর্যন্ত নিম সিংহই প্রেরণা হয়ে যান ধ্রুবর।

২৩ বছর বয়সী সেই ধ্রুব ডাক পেয়েছেন ভারতীয় টেস্ট দলে। প্রথম দুই টেস্টে ছিলেন বেঞ্চে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) রাজকোটে শুরু হতে যাওয়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টে অভিষেকের দুয়ারে তিনি।

উইকেটরক্ষক কেএস ভরতের জায়গায় অভিষেক হতে পারে ধ্রুবর। অনুশীলনে খুব ভালোভাবে তাকে পর্যবেক্ষণ করেছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও কোচ রাহুল দ্রাবিড়। অভিষেক হলে ভারতের ঐতিহাসিক ‘টেস্ট ক্যাপ’ উৎসর্গ করবেন কাকে?

 ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে ধ্রুব জানালেন,‘‘আমার বাবাকে। তিনি আমার নায়ক। যখন কোন দ্বিধায় থাকি, বাবার কাছেই যাই। আমাকে সঠিক পথটা দেখিয়েছেন তিনিই। বাবা আমার নায়ক।’’

এর আগে অনেক সাক্ষাৎকারেই মায়ের নাম নিয়েছেন ধ্রুব। মা, সোনার গয়না বিক্রি না করলে যে ক্রিকেট কিটই কেনা হত না তার।

 গত বছর আইপিএলে রাজস্থানের হয়ে নজর কেড়েছিলেন ধ্রুব। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার রান করেছিলেন ১৭২.৭০ স্ট্রাইক রেটে। প্রথম শ্রেণীর ১৫ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরিসহ ৪৬.৪৭ গড়ে করেছেন ৭৯০ রান। ভারতীয় ক্রিকেটে তাই সম্ভাবনাময় উইকেটরক্ষক ব্যাটার ভাবা হচ্ছে ধ্রুবকে।

জাতীয় দলের সতীর্থদের সঙ্গে গত দুই টেস্ট ধরেই রয়েছেন ধ্রুব। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে বললেন,‘‘শুরুতে টিম বাসে কোথায় বসব, এ নিয়ে দ্বিধায় থাকতাম। দেখা গেল, একখানে বসেছি আর সিনিয়র কেউ এসে বলল এটা আমার সিট! তাই বাস ৮টায় ছাড়লে ৭টা ৫৯ মিনিটে আসতাম (হাসি)।’’

রাজকোটেই শততম টেস্ট খেলতে চলেছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের ১৬তম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলতে যাচ্ছেন স্টোকস।

বর্তমান দলে ১০০ বা বেশি টেস্ট খেলা ক্রিকেটার হচ্ছেন জো রুট ও জেমস অ্যান্ডারসন। তাদের সঙ্গী হতে যাচ্ছেন বলে রোমাঞ্চিত কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে স্টোকস জানালেন, ‘‘সব টেস্টই পরের টেস্টের সমান গুরুত্বপূর্ণ। এরপর আরেকটি টেস্ট আসবে, যেটা ১০১তম টেস্ট হবে। ক্যারিয়ার কত লম্বা সেটিরওই প্রমাণ এটি। কিন্তু ৯৯, ১০০ কিংবা ১০১-এ কী আসে যায়। এটা শুধু একটি সংখ্যাই। এর অর্থ এই নয় যে আমি সন্তুষ্ট নই।’’