Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত গ্রেপ্তার

মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত
মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত
[publishpress_authors_box]

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলটির নেতা ও সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে গ্রেপ্তার সাংবাদিকের তালিকায় যোগ হলো মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তের নাম।

এই দুজনকে সোমবার ভোরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ভারত সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।

কী অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা ধোবাউড়া থানা পুলিশ স্পষ্ট করেনি। তবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যে শতাধিক মামলা হয়েছে, তার কয়েকটিতে এই দুই সম্পাদকও আসামি।

এর আগে গত ২১ আগস্ট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপাকে আটকের পর তাদের একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছিল পুলিশ, রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল।

তার তিন সপ্তাহ পর গ্রেপ্তার করা হলো শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবুকে। ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাবু গণমাধ্যম সম্পাদকদের একটি সংগঠন এডিটরস গিল্ডের সভাপতি। শ্যামলও এডিটরস গিল্ডের সদস্য।

মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তের সঙ্গে একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার মাহবুবুর রহমানকেও আটকের খবর দিয়েছেন ধোবাউড়া থানার ওসি মো. চান ‍মিয়া।

মাহবুবুরের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা সবাই একটি গাড়িতে চড়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। স্থানীয়রা তাদের আটকায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় নেয়।

ঢালাও অভিযোগে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার নিন্দা জানিয়ে গণমাধ্যমের সম্পাদকদের আরেক সংগঠন সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি দেওয়ার তিন দিনের মাথায় গ্রেপ্তার হলেন দুই সাংবাদিক শ্যামল ও বাবু।

যাদের নেতৃত্বে আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটেছে, সেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর’ হিসেবে চিহ্নিত করে।

চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের দমন-পীড়ন চলার মধ্যে এডিটরস গিল্ড এক বিবৃতিতে এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিবৃতি দিয়েছিল।

গত ২৪ জুলাই এডিটরস গিল্ডের উদ্যোগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে একটি মতবিনিময় সভায় বসেন বেশ কয়েকজন সম্পাদক।

সেই বৈঠকে শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে আন্দোলনের নামে নাশকতাকারীদের কোনও ছাড় না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল।

ওই বৈঠকে যে সাংবাদিকরা ছিলেন, সরকার পতনের পর তাদের বিভিন্ন জনের নামে মামলা হচ্ছে।

এদিকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এসব মামলা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন তুলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তারা গণমাধ্যমকর্মীদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে মালিকানার কর্তৃত্বের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনার নেতৃত্বেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।

মোজাম্মেল বাবুর একাত্তর টেলিভিশনের বার্তা প্রধান ছিলেন শাকিল, তার স্ত্রী রুপা ছিলেন প্রিন্সিপাল করেসপন্ডেন্ট। সরকার পতনের পর বেসরকারি টেলিভিশনটির কর্তৃত্ব হারান বাবু, ছাঁটাই করা হয় শাকিল ও রুপাকেও।

সরকার পতনের পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটিতেও পরিবর্তন আসে। সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তকে কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পরদিন গত ৬ আগস্ট ভারত যাওয়ার পথে শ্যামল দত্তকে আখাউড়া সীমান্তে আটকে দেওয়ার খবর এসেছিল। এরপর থেকে অপ্রকাশ্য ছিলেন তিনি। সরকার পতনের পর বাবুও ছিলেন অপ্রকাশ্যে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত