ঢাকার গুলশানে দখলে রাখা যে বাড়িটি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে হারাতে হচ্ছে তার কথা নির্বাচনী হলফনামায় আলাদা করে উল্লেখ করেননি তিনি।
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গুলশান আবাসিক এলাকার ১০৪ ও ১০৩ নম্বর সড়কের সংযোগস্থলের (কর্নার প্লট) ৪০০ কোটি টাকা দামের ২০ কাঠাজমিসহ বাড়িটি তিনি হলফনামায় সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেননি।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জিতে সালাম মুর্শেদী খুলনা-৪ আসন সংসদ সদস্য হয়েছেন।
তিনি নির্বাচনী হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তির বিবরণে দালান, আবাসিক বা বাণিজ্যিক সংখ্যা, অবস্থান ও অর্জনকালীন সময়ের আর্থিক মূল্য হিসাব দেখিয়েছেন ১১ কোটি ৫৫ লাখ ২২ হাজার ৫০৪ টাকা। পাশাপাশি স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি শুধু অর্থমূল্য লিখেছেন ৩৪ লাখ টাকা।
হলফনামর তথ্য অনুযায়ী, আব্দুস সালাম মূর্শেদী শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক পাস। তার বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারী মামলা হয়নি।
পেশার বিবরণীতে সাবেক এই ফুটবলার উল্লেখ করেছেন, ব্যবসা প্রাইভেট পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাছাড়া পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান, বস্ত্রশিল্প, ব্যাংক, হাসপাতাল ইত্যাদির পরিচালক।
গুলশানে দখলে রাখা বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হওয়ায় সেটি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে বুঝিয়ে দিতে মঙ্গলবার আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক সময়ের ফুটবলার, বর্তমানে ব্যবসায়ী ও সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদীদের এই বাড়ি বেহাত হওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছেন সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, ফুটবল পাগল এই আইনজীবীও এখন একজন সংসদ সদস্য। দুজনে এক দল করলেও সুমন সংসদে আছেন স্বতন্ত্র পরিচয়ে।
তিন দশক ধরে মুর্শেদী বাড়িটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন দাবি করে একটি রিট আবেদন করেন সুমন। সেই আবেদনে কয়েক দফা শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাড়িটি তিন মাসের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়।
আদালতের নির্দেশকে ‘জনগণের বিজয়’ হিসাবে দেখছেন রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী অনীক আর হক।
এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাফুফের সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হলেন এনিয়ে দ্বিতীয়বার। অন্যদিকে সুমন হবিগঞ্জ-৪ আসনে এবারই প্রথম সংসদ সদস্য হন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে।
তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী সালাম মুর্শেদী ২০০৯ সালে বিজিএমইএর সভাপতি হওয়ার সময় থেকে আওয়ামী লীগে ঘেঁষতে শুরু করেন। ২০১৮ সালে খুলনা-৪ আসনে উপনির্বাচনে প্রথম সংসদ সদস্য হন তিনি। অন্যদিকে যুবলীগের এক সময়ের নেতা সুমন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন।
মুর্শেদীর নির্বাচনী হলফনামা