Beta
শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

৩২ দিন পর ২৩ নাবিকসহ এমভি আব্দুল্লাহ মুক্ত

এস আর শিপিংয়ের পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ
এস আর শিপিংয়ের পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ
[publishpress_authors_box]

প্রায় ৩২ দিন জিম্মি থাকার পর সোমালিয়ার দস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ও এর ২৩ নাবিক। বাংলাদেশে সময় শনিবার রাত সোয়া ৩টার দিকে নাবিকসহ জাহাজটি মুক্তি পায় বলে নিশ্চিত করেছে জাহাজটির মালিকপক্ষ দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপ।

তারা জানান, মুক্তি পাওয়ার পর জাহাজ নিয়ে নাবিকরা সোমালিয়া উপকূল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। জাহাজটির চলার পথে অন্তত চারটি যুদ্ধজাহাজ নিরাপত্তা টহল দিচ্ছে, যাতে নতুন করে কোনও দস্যুদের কবলে না পড়ে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছার পর সেখান থেকে নাবিকরা বাংলাদেশে আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে চূড়ান্ত অগ্রগতির কথা গণমাধ্যমকে বলেছিলেন। এরপর শনিবার গভীর রাতে নাবিকদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। এর মধ্য দিয়ে ৩২ দিনের জিম্মিদশার অবসান হলো।

এর আগে ২০১০ সালে সোমালিয়ার দস্যুদের হাতে জিম্মি হয়েছিল কেএসআরএম গ্রুপেরই আরেক জাহাজ ‘জাহান মণি’। নাবিকসহ সেই জাহাজ দস্যুদের হাত থেকে মুক্ত করতে প্রায় ১০০ দিন লেগেছিল।

তবে এমভি আব্দুল্লাহ ও জাহাজটির নাবিকরা কত টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে দস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হলো সে বিষয়ে জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ, ইন্স্যুরেন্স কম্পানি এবং মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেউই মন্তব্য করেনি।

মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে কেএসআরএম গ্রুপের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত রবিবার সকালে সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “দস্যুদের হাত থেকে মুক্ত হয়ে নাবিকরা ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আরব আমিরাতের বন্দরে পৌঁছার পর সেখান থেকে নাবিকরা যে যার গন্তব্যে রওনা দেবে। নাবিকরা সবাই নিরাপদ এবং অক্ষত আছেন।”

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, মুক্তিপণের ডলার নিয়ে সোমালিয়া উপকূলবর্তী গদবিরাজ এলাকায় গিয়ে ছোট একটি উড়োজাহাজ থেকে বাক্সভর্তি ডলার সাগরে ফেলা হয়। ওয়াটার প্রুফ অন্তত তিনটি বাক্সে ডলারগুলো ছিল। ডলার গুনে নিশ্চিত হওয়ার পর সোমালিয়ার দস্যুরা এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ থেকে নেমে যায়। এর পরেই জাহাজটি জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে রওনা দেয়।

গত ১২ মার্চ মোজাম্বিকের বন্দর থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেয়। সোমালিয়া উপকূল পাড়ি দেওয়ার সময় ১২ মার্চ দস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি।

এরপর নাবিকদের নিরাপদ এবং অক্ষত অবস্থায় ছাড়িয়ে নিতে জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ দেনদরবার শুরু করে। ৩১ দিন ধরে দরকষাকষির পর ৩২তম দিনে নাবিকরা মুক্তি পেল।

নিরাপদে অক্ষত অবস্থায় নাবিকদের মুক্তির বিষয়টি জানার পর স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন জিম্মি থাকা বাংলাদেশি নাবিকের পরিবার, স্বজন এবং নাবিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনটির সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার বেশ কম সময়েই কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ নিরাপদে ও অক্ষত অবস্থায় নাবিকদের মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। ২৩ নাবিকের সবাই পরিবারের কাছে নিরাপদে ফিরে আসছে- এই মুহূর্তে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে খুশির এবং স্বস্তির খবর।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত