মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের গুলি ও মর্টার শেল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আসতে থাকায় ঝুঁকিতে পড়েছেন দুই জেলার এক লাখের বেশি বাসিন্দা। ইতোমধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ১৮০টি পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছেছেন।
ঘুমধুম সীমান্তে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেখানকার বাকি বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে।
কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের তথ্য বলছে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন থেকে শুরু করে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় এক লাখের বেশি বাসিন্দা রয়েছেন। তারা সবাই ঝুঁকিতে রয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকালে ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন।
পরিদর্শন শেষে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক বলেন, “ঘুমধুম সীমান্তের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সীমান্ত এলাকার ২৪০টি পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এর মধ্যে ১৫০ পরিবার নিজ উদ্যোগে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আর জলপাইতলী এলাকা থেকে ৩০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
সবাইকে নিরাপদে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “দুটি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। ঝুঁকিতে যারা আছেন, তারা সেখানে চলে যান। এটা প্রশাসনের পক্ষে অনুরোধ।”
মঙ্গলবার দুপুর থেকে ঘুমধুমে মাইকিং করে তুমব্রু, কোনা পাড়া, মাঝের পাড়া, ভাজা বনিয়া পাড়া, বাজার পাড়া, চাকমা হেডম্যান পাড়া,পশ্চিবকুল পাড়া, ঘুমধুম নয়াপাড়া, পূর্বপাড়া, মাধ্যম পাড়া এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে সাহায্য করবেন।
সীমান্তের ওপার থেকে ছুটে আসা বুলেট ও বোমার অংশে তাৎক্ষণিকভাবে হাত না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, “অবিস্ফোরিত বুলেট ও বোমা বিস্ফোরণ হতে পারে।”
জেলা প্রশাসক পরে সোমবার মিয়ানমার থেকে আসা মর্টার শেল বিস্ফোরণে নিহত হোসনে আরা বেগমের বাড়ি যান। সেখানে শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়ে ২০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেন তিনি।
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তে ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান জানিয়েছেন, সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার নিদের্শনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক বলেন, “পরিস্থিতি বিবেচনা করে সীমান্তের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।”