Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিজিপি সদস্যদের পরিবারও জান্তার তোপের মুখে   

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরে একটি চেকপয়েন্টে বিজিপির সদস্যরা।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরে একটি চেকপয়েন্টে বিজিপির সদস্যরা।
Picture of সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

সকাল সন্ধ্যা ডেস্ক

মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের সঙ্গে লড়াইয়ে ক্রমাগত কোণঠাসা হয়ে পড়ছে জান্তা বাহিনী। বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অর্ধশতাধিক শহরাঞ্চল থেকে সেনাদের হটিয়ে দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। তাদের সঙ্গে যুদ্ধে পেরে উঠতে না পেরে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাচ্ছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা।

প্রাণ বাাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশেও ঢুকে পড়ছে তাদের অনেকে। গত কয়েক মাসে বিজিপি সদস্যসহ মিয়ানমারের ৭ শতাধিক নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

এমন পরিস্থিতিতে অভিযোগ উঠেছে, লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছু হটা বিজিপি কর্মকর্তাদের ওপর চড়াও হয়েছে জান্তা বাহিনী। এমনকি তাদের স্ত্রী-সন্তানদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।      

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এমন অভিযোগ করেছেন বিজিপিরই এক কর্মকর্তা। তার নাম প্রকাশ করেনি মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।  

ভিডিওতে ওই কর্মকর্তা বলেন, গত সপ্তাহের শেষ দিকে বিজিপির পিছু হটা দুই কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের চার সদস্য দুটি মোটরচালিত নৌকায় করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাতে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে পরিবারের সদস্যদের বহনকারী নৌকাটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের উপকূলে ডুবে যায়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যাত্রীদের কেউ বেঁচে নেই।

তিনি জানান, মোটরচালিত নৌকাটিতে বিজিপির দুই কর্মকর্তার স্ত্রী ও শিশু সন্তান ছিল।  

ধারণা করা হচ্ছে, ৭ জুন বা তার আগে আরাকান আর্মি যখন ৯নং বিজিপি ব্যাটালিয়নের নিয়ন্ত্রণ নেয়, সে সময় এই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।           

বিজিপির ওই কর্মকর্তার অভিযোগ, জান্তা বাহিনীর একটি নৌকায় (ল্যান্ডিং ক্রাফট) চড়তে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মোটরচালিত দুটি নৌকায় করে রওনা দিয়েছিলেন বিজিপির পিছু হটা কর্মকর্তারা। সেসব নৌকা লক্ষ্য করে ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালায় জান্তা বাহিনী।

তিনি বলেন, জান্তা বাহিনীর ওই ল্যান্ডিং ক্রাফটের কাছাকাছি পৌঁছার মুহূর্তেই মোটরচালিত নৌকা দুটিতে গুলি ছোড়া হয়। নৌকা দুটি তখন ঘোরার চেষ্টা করলে একটি ডুবে যায়। সেটিতে বহনকারী চার নারী-শিশুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

মিয়ানমারের শান রাজ্যে বিদ্রোহীদের অবস্থান।

নিজ নিজ কমান্ডারদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বিজিপির কর্মকর্তারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।  

বিজিপির ওই কর্মকর্তা জানান, মোটরচালিত নৌকাগুলোতে করে প্রথমে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জান্তার ওই ল্যান্ডিং ক্রাফটে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নারী, শিশু ও আহত পুলিশ সদস্যদের নেওয়া হয়।       

“বিজিপি সদস্য, তাদের স্ত্রী, শিশু সন্তান ও আহতদের যখন আমরা নৌকায় করে নিরাপদ স্থানে নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম, ঠিক সে সময় জান্তা বাহিনী গুলি চালায়। তারা চাইছিল না, মোটরচালিত নৌকার আরোহীরা ল্যান্ডিং ক্রাফটিতে চড়ে বসুক,” বলেন তিনি।

ভিডিওটি সম্পর্কে আরাকান আর্মির মুখপাত্র উ খাইং থুখা বলেন, “জান্তা বাহিনী যে মনোবল হারিয়েছে এবং অযোগ্য নেতৃত্বের অধীনে আছে, তা এই ভিডিওতে স্পষ্ট।

“জান্তা বাহিনীর মানবিক মূল্যবোধেরও মৃত্যু ঘটেছে। এ কারণে তারা নারী ও শিশুদের বিপদের মধ্যে ফেলেছে।”       

অবশ্য এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জান্তাপন্থি একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল দাবি করেছে, যোগাযোগে সমস্যার কারণে পিছু হটা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ল্যান্ডিং ক্রাফটের সংযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।              

চ্যানেলটি আরও দাবি করেছে, জান্তা বাহিনীর সদস্যরা কেবল নারী ও শিশুদের ধাওয়া করা আরাকান আর্মির সদস্যদের দিকে গুলি ছুড়েছে। তাদের বহনকারী নৌকায় নয়।       

তবে আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা বলছেন, নারী-শিশুদের বহনকারী নৌকার পিছু নেয়নি তাদের সদস্যরা।     

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত