Beta
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা, ৩ দিনে ৬২ সেনা নিহত

কাচিন
সম্মুখ সমরে কেআইএ সদস্যদের অবস্থান। ছবি : ইরাবতী
[publishpress_authors_box]

মিয়ানমারে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) এবং এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশনের (ইএও) সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে আরও কয়েকটি ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সামরিক জান্তা। গত তিনদিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলা এসব সংঘাতে নিহত হয়েছেন জান্তা বাহিনীর অন্তত ৬২ সদস্য।

দেশটির সংবাদ মাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাচিন ও কারেন প্রদেশ এবং সাগাইং, মাগউই এবং মান্দালায় অঞ্চলে এসব ঘটনা ঘটে।

ইরাবতী জানিয়েছে, পিডিএফ ও ইএও’র কাছ থেকে সংঘর্ষের এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে সেনা সদস্য হতাহতের বিষয়টি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিডিএফের নিয়ন্ত্রণে থাকা সাগাইং দখলমুক্ত করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে জান্তা বাহিনী।

হোমালিন পিডিএফ গ্রুপ জানিয়েছে, গত বছর ২২ নভেম্বর সাগাইংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। নতুন করে শহরটির দখল নিতে গত ২৬ জানুয়ারি থেকে অভিযান শুরু করে সামরিক জান্তা ও তাদের মিত্র শান্নি ন্যাশনালিটিজ আর্মির (এসএনএ) প্রায় ৪০০ সদস্য। তবে বিদ্রোহীদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে ১০ দিন পর তারা পিছু হটে এবং অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।

জান্তা ও মিত্র বাহিনী চলে যাওয়ার পর তাদের পরিত্যক্ত স্থাপনা থেকে ১৫ টি সমাহিত মৃতদেহ পাওয়ার কথা জানিয়েছে হোমালিন পিডিএফ। সংঘর্ষে ৪০ জান্তা সদস্য আহত হওয়ার খবরও জানায় তারা।

মিয়ানমারের ইয়েসাগইয়ো শহরের পিডিএফ সদস্যরা জানিয়েছেন, সামরিক জান্তার লাইন ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন-২৫৬ এর অন্তত ১০০ সদস্যের পর ২০টি ড্রোন হামলা চালিয়েছেন বিভিন্ন পিডিএফ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।

ব্ল্যাক টাইগার
মাগউই প্রদেশে যুদ্ধরত মাইনগিয়ান ব্ল্যাক টাইগার পিডিএফ সদস্যরা। ছবি : ইরাবতী

এরপর শনিবার জান্তা সদস্যরা মাগউই প্রদেশের কেয়াউক হ্লে বি গ্রামে অবস্থান নিয়ে ঘরবাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়।

পিডিএফের ড্রোন হামলায় সামরিক জান্তার দুই সদস্য নিহত ও ছয়জন আহত হন বলেও জানানো হয়।

জান্তাপন্থী গ্রাম জি তাওয়ে ড্রোন হামলা চালানোর কথাও জানায় পিডিএফ। তবে সেখানে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

শনিবার ইয়েসাগইও শহরে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর গ্রেনেড ও ৪০ এমএম বিস্ফোরক ব্যবহার করে হামলা চালায় মাইনগিয়ান ব্ল্যাক টাইগার পিডিএফসহ আরেকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। যেখানে অন্তত দুজন জান্তা সদস্য আহত হন।

মাইনগিয়ান ব্ল্যাক টাইগার পিডিএফ জানিয়েছে, মান্দালায় জেলার পিডিএফ সদস্যদের সঙ্গে মিলে তারা ১০টি মাইন বিস্ফোরণের মাধ্যমে একটি মিলিটারি ট্রাকে হামলা চালিয়েছে। শনিবার নাতোগি শহরতলীর দুটি গ্রামের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

ট্রাকটি মাইনগিয়ান শহর থেকে নাতোটি শহরের দিকে যাচ্ছিল। হামলার পর পাশের থারইয়ারগন গ্রামে ট্রাকটি বিরতি নেয় এবং আশপাশের এলাকাজুড়ে গুলি বর্ষণ করেন ট্রাকে থাকা সেনা সদস্যরা। এরপর সেটি আবার মাইনগিয়ানে ফিরে যায়।

মিলিটারি সূত্রের বরাত দিয়ে মাইনগিয়ান ব্ল্যাক টাইগার জানিয়েছে, এ হামলায় সামরিক জান্তার দুই সদস্য নিহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, নাটোগাই অঞ্চলের পিডিএফ জানিয়েছে, শুক্রবার মান্দালায়ের মাইনগিয়ান শহরের কাছে সান পেয়া গ্রামে একটি সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায় বিদ্রোহীদের যৌথ গ্রুপ। এতে ঘাঁটিতে থাকা ২০ জনের মধ্যে অন্তত ১৫ জান্তা সদস্য নিহত হয়েছেন।

এ সময় ওই গ্রামে আটটি গাড়িতে আসা অতিরিক্ত জান্তা সদস্যদের ওপরও হামলা চালানো হয়, জান্তা বাহিনীর কাছে থাকা কিছু অস্ত্রও নিজেদের জিম্মায় নেয় পিডিএফ।

দু’পক্ষের মধ্যকার এই সংঘর্ষে মাইনগিয়ান ব্ল্যাক টাইগার পিডিএফের এক সদস্য নিহত হন বলেও জানানো হয়েছে।

এছাড়া রবিবার কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ) নান্ত তাইন গ্রামের জান্তা ঘাঁটির দখল নিয়েছে।

কাচিন প্রদেশের স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ইরাবতী এ তথ্য জানিয়েছে। সেখানে বলা হয়, গত কিছুদিন ধরে এই ঘাঁটিটি ঘিরে রেখেছিল কেআইএ। নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখানে জান্তা বাহিনীর আট সদস্যের লাশ পাওয়া যায়।

একই দিন থানডাওনগি শহরের সেনাঘাঁটির দখল নেয় পিডিএফ ও কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি। তাদের হামলায় এতে জান্তা বাহিনীর ২০ জনের বেশি সদস্য নিহত হন। ওই ঘাঁটি থেকে বিপুল পরিমান অস্ত্র, গোলা ও খাবার নিজেদের জিম্মায় নেয় তারা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত