বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ভূখণ্ড থেকে আসা একটি মর্টার শেলের গোলার আঘাতে স্থানীয় এক নারী ও এক রোহিঙ্গা নাগরিক নিহত হয়েছেন।
সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঘুমধুম সীমান্তের জলপাইতলি এলাকায় মর্টারের গোলা এসে আঘাত করলে তারা মারা যান।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ঘুমধুম সীমান্তে দুইজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে আসা মর্টার শেলের গোলার আঘাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের একজন স্থানীয় বাসিন্দা বাদশা মিয়ার স্ত্রী হোসনে আরা (৫৫)। অন্যজনের নাম নবী হোসেন (৭০), তিনি রোহিঙ্গা নাগরিক, দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জলপাইতলী এসেছিলেন।
ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (আইসি) মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়াও এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. আনোয়ান হোসেন জানান, দুপুরে ঘরে ভাত খাওয়ার সময় মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে একটি মর্টার শেল এসে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই হোসনে আরা বেগম ও নবী হোসেন নিহত হন। নিহত রোহিঙ্গা নবী হোসেন দিনমজুর হিসেবে নিহত হোসনে আরা বেগমের বাড়িতে কাজ করতেন।
মিয়ানমারে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতির জেরে দেশটির সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মাঝে মাঝেই দেশটি থেকে গুলি, মর্টার শেলের গোলা এসে পড়ছে সীমান্তের এপারে বাংলাদেশে। সোমবার সকালেও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে গুলির শব্দ পাওয়ার কথা জানান স্থানীয়রা।
এরপর দুপুরেই মিয়ানমার থেকে আসা মর্টার শেলের আঘাতে দুজনের মৃত্যুর খবর এলো।
এর আগে রবিবার সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির অন্তত ৯৫ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানায় বিজিবি।
পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিজিবি
মিয়ানমারের ছোড়া মর্টারের গোলায় বাংলাদেশে দুজন নিহতের ঘটনায় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোরশেদ আলম।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে সংঘাত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিজিবি। এরই মধ্যে সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
কয়েকদিন আগে উখিয়ার পালংখালী সীমান্তের ভেতরে কয়েকটি মর্টাল শেল এসে পড়ার ঘটনায় বিজিপির কাছে প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়েছিল বলে জানান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোরশেদ আলম।
শনিবার রাত থেকে তমব্রু, বাইশফাঁড়ি, ঘুমধুম এলাকায় আরকান আর্মি এবং বিজিপির মধ্যে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করায় সীমান্তে বিজিবি সদস্যের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি কঠোর সর্তক অবস্থান নেওয়া হয় বলেও জানান তিনি। বলেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি।