প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধ বাধাতে চাচ্ছে বলে দাবি করেছেন র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে শনিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই দাবি করেন। কাশিয়ানীর এম এ খালেক ডিগ্রি কলেজ মাঠে কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন র্যাবপ্রধান।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, “মিয়ানমার অনেক আগে থেকেই চাচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য, অনেক আগে থেকেই। রোহিঙ্গা ঢোকানো থেকে শুরু করে পায়ে পাড়া দিয়ে…”
তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়চেতা মনোভাব ও প্রজ্ঞা, উনি কখনও যুদ্ধে জড়াবেন না। কারণ, এখন যুদ্ধে জড়ানো মানে দেশটা শেষ হয়ে যাওয়া।”
মিয়ানমার সরকারের যুদ্ধে জড়াতে চাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে র্যাবপ্রধান বলেন, “মিয়ানমারে এখন সামরিক সরকার রয়েছে। তারা এখন চাচ্ছে যে যুদ্ধ বাধাতে পারলে ও (মিয়ানমারের জান্তা সরকার) সেফ (বেঁচে যাবে) হবে। কারণ ওর দেশে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, ওর দেশের আরাকান আর্মি ওর বিরুদ্ধে গিয়ে বিভিন্ন জায়গা দখল করছে। (মিয়ানমারের জান্তা) সরকার বাঁচার জন্য উসকানি দিচ্ছে।”
মিয়ানমার এখন মাদক চোরাচালানের বড় রুট উল্লেখ করে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, মাদক এখন মিয়ানমার থেকে বেশি আসছে। এটি পরিকল্পিতভাবে পাঠানো হচ্ছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ। যেকোনো মূল্যে এই রুট বন্ধ করা হবে।
তিনি বলেন, “মাদক হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসা। রাতারাতি ধনী হওয়ার ব্যবসা। কারা এই ব্যবসা করেন, তা জনপ্রতিনিধিসহ সবাই জানে। কিন্তু সবাই সবকিছু জানলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করে না। কোনও একক বাহিনীর পক্ষে মাদক নির্মূল করা সম্ভব না। মাদক নির্মূল করতে হলে সবাই মিলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মাদক চলে গেলে দেশ হুমকির মুখে পড়বে উল্লেখ করে র্যাবপ্রধান বলেন, “ভারতীয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করা হলেও মিয়ানমার থেকে ইয়াবা, আইসসহ বিভিন্ন মাদক সমানে পাচার হচ্ছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে ‘অল আউট অ্যাকশনে’ যেতে হবে। গডফাদার, কিশোর গ্যাং কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।”
শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদ্দেশে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, “আপনাদের (শিক্ষকদের) মডেল হতে হবে। কারণ, পরিবারের পরেই আপনাদের স্থান। আপনাদেরই সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। আর ছেলেমেয়েকে স্কুল কলেজে পাঠিয়ে (অভিভাবকদের) ঘরে বসে থাকলে হবে না। খবর রাখতে হবে মাদকের সহজলভ্যতা সন্তানটিকে শেষ করে দিচ্ছে কি না।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন র্যাব-৬ অধিনায়ক লে. কর্নেল ফিরোজ কবীর। আরও উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, এম এ খালেক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কে এম মাহাবুব, ভাটিয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম তালুকদার, পুলিশ সুপার (অপারেশন) কাজী মাহাবুবুল আলম।
অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালের কাশিয়ানী উপজেলার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ১০৯ শিক্ষার্থীর হাতে ক্রেস্ট ও জনপ্রতি ১০ হাজার করে বৃত্তির টাকা তুলে দেন র্যাব মহাপরিচালক।