মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিকে কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দি করা হয়নি। তিনি এখনও কারাগারেই রয়েছেন।
নেপিদো ও ইয়াংগুনের কিছু সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।
গত মঙ্গলবার বিকালে মিয়ানমারের একটি সরকারপন্থী সংবাদ মাধ্যমে প্রথম দাবি করা হয়, দেশটির সাবেক স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্তকে কারাগার থেকে নতুন জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এর এক ঘণ্টা পর দেশটির জান্তা সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন টুন সাংবাদিকদের জানান, শুধু অং সান সু চি ও উইন মিন্তকেই নয় বরং আরও অনেক বয়স্ক বন্দীকেই কারাগার থেকে স্থানান্তর করা হয়েছে। তীব্র তাপদাহের কারণে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনায় এমনটা করা হয়েছে।
তবে সাংবাদিকরা তাদের নতুন অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে মেজর জেনারেল জাও মিন টুন কিছুই বলেননি। সু চি বা উইন মিন্তকে গৃহবন্দি করা হয়েছে এমন কোনও ছবি বা অন্য কোনও প্রমাণও পাওয়া যায়নি। তা সত্ত্বেও স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করে যে সু চি এখন গৃহবন্দি।
সু চির পরিচিত ও নেপিদো কারাগারের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিনি সেখানেই রয়েছেন। আর কর্তৃপক্ষ সম্ভবত তাকে এবং অন্যান্য বয়স্ক বন্দিদের তীব্র গরম থেকে রক্ষায় এয়ার কন্ডিশনার সরবরাহ করেছে। দেশটিতে সম্প্রতি তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রিতে উঠেছে।
একই সূত্র আরও জানিয়েছে, মিয়ানমারের ঐতিহ্যগত নববর্ষ উৎসবের ঠিক আগে সু চি অনুরোধ করেছিলেন, নেপিদো কারাগারের বন্দিদের জন্য যেন মিয়ানমারের ঐতিহ্যবাহী খাবার সরবরাহ করা হয়। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় গুজব ছড়ায়, সু চিকে কারাগার থেকে বের করে আনা হয়েছে।
যাইহোক, সূত্রগুলো জোর দিয়ে বলেছে, সু চি এখনও নেপিদো কারাগারেই রয়েছেন।
গত বছর থাইল্যান্ডের কিছু সংবাদ মাধ্যমও মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কথা মতো প্রচার করেছিল, সু চিকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। এটা ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করা এবং মিথ্যাভাবে নিজেদের ভালো ইমেজ তুলে ধরার জন্য জান্তা সরকারের একটি অপচেষ্টা।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৭৮ বছর বয়সী সু চি ও তার গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাকে বন্দী করে রেখেছে। রাষ্ট্রদ্রোহ ও ঘুষ থেকে শুরু করে টেলিযোগাযোগ আইন লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে সু চিকে মোট ২৭ বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত।
বিশ্বের অনেক দেশের সরকার সু চিসহ মিয়ানমারের অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যসহ কিছু দেশ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।
তথ্যসূত্র : ইরাবতি