ময়মনসিংহে নিজের বাড়ি সামনে খুন হলেন এক সাংবাদিক। তাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত স্বপন কুমার ভদ্র (৬৫) ময়মনসিংহের তারাকান্দা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি আগে স্থানীয় দৈনিক স্বজনের তারাকান্দা উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। জাতীয় দৈনিক খবরপত্র ও স্থানীয় দৈনিক আজকের খবর পত্রিকায় কাজ করেছিলেন তিনি।
বাড়ি তারাকান্দায় হলেও তিনি জেলা শহরের কাছের শম্ভুগঞ্জে থাকতেন। সেখানে তার বাড়ির সামনে শনিবার সকাল ১১টার দিকে তাকে হত্যা করা হয়।
স্বপন এখন কোনও সংবাদমাধ্যমে সরাসরি যুক্ত না থাকলেও ফেইসবুকে এলাকার বিভিন্ন ঘটনা এবং সমস্যা নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করতেন।
সেই লেখালেখির জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যদের উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।
নিহতের ভাগ্নে মানিক সরকার দৈনিক প্রথম আলোকে বলেন, “মাদক নিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট করার কারণে আমার মামাকে হত্যা করা হয়েছে। কেন লেখালেখি করেন, সে জন্যই রাগ ছিল। একারণে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।”
নিহতের ভাতিজা জুয়েল ভদ্রকে উদ্ধৃত করে প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “বেলা ১১টার দিকে নিজ বাসার সামনে বসে ছিলেন চাচা (স্বপন ভদ্র)। ওই সময় তাকে মাথায় এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। চাচির (সবিতা ধর) চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন।”
রক্তাক্ত অবস্থায় স্বপনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা দেখে বলেন, তিনি আগেই মারা গেছেন।
স্বপন ভদ্রের লাশের সুরতহালকারী কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, তার ঘাড়ে ছয়টি কোপের দাগ রয়েছে। বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন।
তারাকান্দা উপজেলার কাকনি ইউনিয়নের জগেশ চন্দ্র ভদ্রের ছেলে স্বপনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছোট ছেলে রনি ভদ্র সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সাগর মিয়া (১৮) নামের এক তরুণকে আটক করেছে। সাগর শম্ভুগঞ্জের মাঝিপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, সাগর এলাকায় বখাটে ও নেশাগ্রস্ত হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় মানুষকে ছুরিকাঘাত করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সাগর পালানোর চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ তাকে গৌরীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে।
দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার আজিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, “আটক সাগর যে হত্যাকারী, এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সাগরের কর্মকাণ্ড নিয়ে আগেও প্রতিবাদ করেছিলেন স্বপন ভদ্র। একবার স্বপন ভদ্রের হাতে আঘাত করেছিলেন সাগর।”