ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে ১৪ সেপ্টেম্বর যে বিশেষ সভা করতে চেয়েছিল সরকার, তা আপাতত হচ্ছে না।
আন্দোলনে নিহতদের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার বিকালে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
নিহতদের স্মরণে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া স্মরণসভা আপাতত হচ্ছে না জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হওয়ায় পর এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শহীদদের যে তালিকা করছে, সেটার ওপর ভিত্তি করেই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।”
তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে ৭২৮ জন শহীদ ও ২০ হাজার ২৬৩ জন আহত হওয়ার তালিকা এসেছে। তাদের ঠিকানা খুঁজে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “বেসরকারি সূত্রে ৮০০ জন শহীদের একটা তালিকা আছে, যেটার সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদেরও তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবারের মধ্যে একটি চূড়ান্ত তালিকা হয়তো পাবো। তারপরে স্মরণসভার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় জুলাইয়ের শুরুতে। শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের এই আন্দোলন ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতায় রূপ নেয়।
পরের দিন সারাদেশে ছয় জনের মৃত্যু হলে বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করে। বাড়তে থাকে সংঘাত, সহিংসতা এবং প্রাণহানি।
শুরুতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করে তৎকালীন সরকার। তবে এতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। তীব্র আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত পতন ঘটে সরকারের। গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
আন্দোলনের সমন্বয়কদের দাবি, প্রায় দেড়মাসে অন্তত এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী সহিংসতায় অন্তত ৬৫০ জন নিহত হয়েছে।