বাংলাদেশে এখন পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। মানুষ চাইছে দেশের ভালোর জন্য সংস্কার। একই চাওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যও। ক্রিকেটের উন্নতিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও (বিসিবি) নতুনত্ব চাইছে ক্রিকেটপ্রেমীরা।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভালোর জন্য বরারবরই সোচ্চার নাজমুল আবেদীন ফাহিম। তিনিও বলেছেন দেশের ক্রিকেটের প্রয়োজনে বিসিবির নেতৃত্বে পরিবর্তন আসা খুব দরকার।
নাজমুল আবেদীন বিসিবিতে নারী ক্রিকেটের প্রধান ছিলেন। তার সময়েই নারীরা এশিয়া কাপ জিতেছিল। শনিবার মিরপুরে নারীদের অনুশীলন দেখতেই এসেছিলেন তিনি।
সেখানেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের অবনমনের দায় বিসিবির নেতৃত্বকেই দিলেন ফাহিম, “অবশ্যই দায়টা সবচেয়ে বেশি লিডারশিপে (নেতৃত্বে)। লিডারশিপের মধ্যে পরিবর্তন আনা খুব দরকার। এ জায়গাটা ঠিক থাকলে বাকি জিনিস এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়। মানে এখন পুনর্গঠন করতে হলে আইসিসির আইন সংক্রান্ত অনেক বিষয় আছে, অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু আমরা তো অবশ্যই চাইবো এমন একটা বোর্ড হবে যেখানে ভালো একজন লিডার থাকবে।”
ফাহিমের মতে বাংলাদেশের ক্রিকেটে নেতৃত্ব নেওয়ার মতো দেশে আছে। যারা ক্রিকেট নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখবেন। অতীতের ভুল বা অনিয়ম দূর করে নতুন ভাবে এগিয়ে যাবেন।
বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টার মতে অতীতের নেতৃস্থানীয়দের ভুল ও অনিয়সের কারণে বিসিবি সু-শৃঙ্খল ছিল না, “আমার যেহেতু কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে সেদিক থেকে বলব বিসিবি কিন্তু যথেষ্ট শৃঙ্খল প্রতিষ্ঠান না। সবাই বাইরের দিকের চাকচিক্য দেখে মনে করে ভিন্ন কিছু। কিন্তু বিসিবির যে সুযোগ ছিল সুশৃঙ্খল হওয়ার তা হয়নি।”
এর কারণে উল্লেখ করে ফাহিম যোগ করেন, “অনেকগুলো কারণে হয়নি, অনেকের ইচ্ছাকৃত ভুলের কারণে হয়নি। আমরা দেখেছি ক্রিকেটের মাঠে কি হয়েছে, ক্লাবগুলোর কি অবস্থা, বিপিএলে কি হয়েছে। পুরো খেলাকেই নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এগুলো ঠিক করলে অনেক ধরনের সংকট ঠিক করা যেতে পারে। আমাদের তো নেপালের সঙ্গে জেতার পর খুশি হওয়ার কথা না।”
এই কঠিন সময়ে বিসিবির পরিচালকদের অনুপস্থিতিও ভালো লাগেনি এই ক্রিকেট কোচের। সামনে জাতীয় দলের পাকিস্তান সিরিজ, দুই মাসের মধ্যে একটি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বাংলাদেশে কিন্তু পরিচালকরা বোর্ডেই আসছেন না।
ফাহিম জানিয়েছেন এতে স্পষ্ট পরিচালকরা ক্রিকেটের সেবক না, “এতে বোঝা যায় তারা তাদের দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করেননি। যদি পালন করতেন তাহলে এই সময়ে সাহস করে আসতেন। তারা আসলে ক্রিকেটের সেবক না। তারা নিজেদের এজেন্ডা পূরন করেছেন গত একটা যুগ বা তার বেশি সময়ে, এজন্যই এখন আসতে পারছেন না।”
নাজমুল আবেদীন ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই তাদের সমর্থন দিয়েছেন। ছাত্ররা নিহত হওয়ার পর রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। নিজের দায়বদ্ধতা থেকে বাসায বসে থাকতে পারেননি এই কোচ।
বলেছেন, “শুরুতে আমি ফেসবুকে ওদের (ছাত্র) প্রতি সমর্থন দিয়েছি। পরে যখন দেখলাম ওদের ওপর হামলা করা হচ্ছে, মারা যাচ্ছে তখন ঘরে বসে থাকা নিজের কাছে অপরাধবোধ কাজ করতো। দেখলাম যে শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা না, প্রাইভেট ভার্সিটি বা সাধারণ মানুষের রাস্তায় প্রতিবাদ করাটা দেখে বাসায় থাকতে পারিনি।”