দেশের ক্রীড়াঙ্গনে একটি ফেডারেশনের প্রধান ছিলেন এতদিন। নাজমুল হাসান পাপন এখন পুরো দেশের ক্রীড়াঙ্গনের প্রধান হয়েছেন। রবিবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কার্যালয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী হিসেবে প্রথম দিন পার করলেন উৎসব মুখর পরিবেশে। প্রথমদিনই দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নিতে তিন বছরের সময়সীমা ঠিক করলেন পাপন।
২০১২ সালে সরকার কর্তৃক মনোনীত সভাপতি হয়ে বিসিবিতে পা রাখেন নাজমুল হাসান। পরের বছর নির্বাচিত বিসিবি সভাপতি হন। সেই থেকে একই পদে ১১তম বছরে পা দিলেন তিনি। এই সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনেকদূর এগিয়ে নিতে সফল হয়েছেন।
তার সময়ে যুব পর্যায়ে ও নারী ক্রিকেট থেকে সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া পুরুষ ক্রিকেটেও সাফল্যের হার বেড়েছে। কিন্তু একই সময়ে দেশের বাকি ক্রীড়াঙ্গনের মধ্যে আর্চারি ছাড়া বড় সাফল্য নেই আর কোনটিতে। এখন পিছিয়ে পড়া এই খেলাগুলোকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
নতুন দায়িত্বে ক্রিকেট বাদে বাংলাদেশের অন্যান্য খেলাকে এগিয়ে নিতে একটা সময়সীমা বেধে কাজ করতে চান নতুন ক্রীড়া মন্ত্রী। ১৯৯০ সালের শেষভাগে কয়েক মাসের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে সর্বশেষ ছিলেন একজন পূর্ণমন্ত্রী। তিনি জাতীয় পার্টির নিতাই রায় চৌধুরী। এর ৩৩ বছর পর এই মন্ত্রণালয় পেয়েছে একজন পূর্ণ মন্ত্রী।
নাজমুল হাসান পাপন প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনগুলোকে তিন বছরের সময় সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা বলেছেন, ‘‘ফেডারেশনগুলোকে মূলত আর্থিক সাপোর্ট দিব। তখন তাদেরকেও আমাকে একটা টার্গেট দিতে হবে। এখন কোথায় আছি, সামনে কোথায় যাব বলতে হবে। তারা ৫-১০ বছরের সময় নিতেই পারে। কিন্তু তিন বছর পর কোথায় যাব সেটা বলতে হবে। যাদের সাপোর্ট দিব তারা সেটা ঠিক মতো কাজে লাগতে পারছে কিনা সেটা দেখতে হবে। কেউ যদি অর্জন না করতে পারে তাহলেই সব বাতিল হবে এমন না, যদি সম্ভাবনা দেখি তাহলে প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। আর যদি দেখা যায় যে তাদের দিয়ে সম্ভব না তাহলে আমরা দ্বিতীয়বার চিন্তা করবো যে ওদের দিয়ে হবে না।’’
একটা সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কাজ করতে চান মন্ত্রী, ‘‘ ফেডারেশনগুলোকে মূলত আর্থিক সাপোর্ট দিব। তখন তাদেরকেও আমাকে একটা টার্গেট দিতে হবে। এখন কোথায় আছি, সামনে কোথায় যাব বলতে হবে। তারা ৫-১০ বছরের সময় নিতেই পারে। কিন্তু তিন বছর পর কোথায় যাব সেটা বলতে হবে। যাদের সাপোর্ট দিব তারা সেটা ঠিক মতো কাজে লাগতে পারছে কিনা সেটা দেখতে হবে। ”
নতুন দায়িত্বের শুরুতে কাজের ধরন কেমন হবে তা জানিয়েছেন মন্ত্রী, ‘‘এখানে অনেক ফেডারেশন। প্রতিটা খেলাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে সব খেলায় আমরা বিশ্বকাপ খেলবো এমন ভাবা ঠিক হবে না। আমাকে আগে ফেডারেশনগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। তাদের সামর্থ্য-সক্ষমতা বা অক্ষমতা কি, তাদের সঙ্গে আলাদা ভাবে বসতে হবে। সমস্যা শুনতে হবে। সেগুলো নোট করে আমি কাজ করবো।’’
কোন কোন ফেডারেশন বা খেলাগুলোকে টার্গেট করে এগোবেন এমন প্রশ্নে পাপন বলেন, ‘‘একটা সময় ফুটবল ছিল এক নম্বরে। এখন ক্রিকেট হয়েছে। এ দুটো খেলা আমাদের বড় পর্যায়ে টার্গেট হতে পারে। কিছু খেলাতে আমরা এশিয়ান গেমসে স্বর্ণের জন্য লক্ষ্য স্থির করতে পারি। কিছু খেলা নিয়ে কমনওয়েলথে স্বপ্ন দেখতে পারি। তো সবগুলো নিয়ে একে একে ভাবতে হবে।’’
এছাড়া সব ফেডারেশনকে একই চোখে দেখতে চান না নতুন ক্রীড়া মন্ত্রী। যেগুলো আগে থেকে ভালো তাদের জন্য আলাদা করে কাজ করবেন। আর যেগুলো পিছিয়ে আছে সেসব ফেডারেশনকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ করে দেবেন।
পাশাপাশি ফেডারেশনগুলোকে শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে স্পন্সর খোঁজার পরামর্শ দিলেন তিনি। স্পন্সরদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে সেই অর্থ খেলায় যথাযথ ভাবে ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন নতুন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী।