কোরবানির ঈদের আগে ১২ লাখ টাকার ছাগল কেনার ঘোষণা দিয়ে ভাইরাল হওয়া তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাতকে নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমান।
ইফাত নামে তার কোনও ছেলে নেই, আর ওই তরুণকে তিনি চেনেনই না দাবি করে তিনি বলেছেন, এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে বলে তার সন্দেহ।
এবার কোরবানির ঈদের আগে মোহাম্মদপুরের ‘সাদিক এগ্রো’ থেকে ১২ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে ফেইসুবকে ভাইরাল হন তরুণ ইফাত।
তখনই ফেইসবুকে আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে ইফাতের বাবা এনবিআরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতি মতিউর। তাকে ‘বাবা’ সম্বোধন করে ইফাতের পোস্টও ছড়িয়ে পড়ে ফেইসবুকে।
শুধু তাই নয়, এই ছাগলের সঙ্গে ইফাতের নানা ব্র্যান্ডের গাড়ির ছবিও আসে ফেইসবুকে। তা ধরে মতিউর রহমানের সম্পদ নিয়ে ওঠে প্রশ্ন।
তুমুল আলোচনার মধ্যে বুধবার মতিউর মুখ খোলেন; বলেন, ইফাত তার ছেলে নন।
তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমার এক ছেলে, এক মেয়ে। আমার ছেলের নাম আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব। আর মেয়ের নাম ফারজানা রহমান ইপ্সিতা।
“আমার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতির ওপর পড়াশুনা করে দেশে এসেছে এক বছর আগে। আর মেয়েটা তার সাত বছরের সন্তান আর স্বামী নিয়ে স্থায়ীভাবে কানাডায় থাকে।”
ইফাতকে চেনেন না দাবি করে তিনি বলেন, “মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে আমার কোনও সন্তান নেই। ওই পরিবারের সঙ্গে আমার দূরতম সম্পর্কও নেই। তাদের বাসা ধানমণ্ডিতে, আর আমি থাকি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়।”
ইফাতের পরিবারের কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি তাদেরকে চিনিও না।”
সব মিলিয়ে এই ঘটনাটি ‘রহস্যজনক মনে হচ্ছে’ বলে জানান মতিউর।
কেন রহস্যজনক, তার ব্যাখ্যায় তার স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকীর নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার কথা বলেন তিনি।
মতিউর বলেন, “গত মাসে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনের সময় রায়পুরায় একটি মার্ডার হওয়াকে কেন্দ্র করে ওই নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। নতুন করে তফসিল ঘোষণা করলে ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
“নির্বাচনে আমার স্ত্রী একজন ক্যান্ডিডেট। তাই আমার পরিবারের সম্মানহানি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যেও কেউ এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।”
এদিকে যাকে নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত, সেই ইফাতের দেখা মিলছে না। ছাগলটি কিনতে তিনি এক লাখ টাকা বায়না হিসাবে দিলেও পরে আর সেটি নেননি বলে সাদিক এগ্রো জানিয়েছে। ছাগলটি এখনও সেই খামারেই রয়েছে।