নেপালে শুক্রবার পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা ছাড়ছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচন্ড। এখন সেখানে রাজনীতিক কে.পি. শর্মা অলির নেতৃত্বে নতুন জোট সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে।
দেশটিতে ২০০৮ সালে ২৩৯ বছরের পুরানো রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করা হয়। এরপর থেকেই দেশটি অস্থিতিশীল অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।
রাজতন্ত্র বিলুপ্তির পর কে.পি. শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন জোট সরকার হতে যাচ্ছে নেপালের ১৪তম সরকার। তবে নতুন সরকার কবে থেকে কার্যকর হবে তা এখনও জানা যায়নি।
হিমালয়বেষ্টিত দেশ নেপালে বিপুল অংকের বিনিয়োগ আছে ভারত ও চীনের। ফলে দেশটির চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে দেশ দুটি।
৬৯ বছর বয়সী দাহাল গত সপ্তাহে তার সবচেয়ে বড় মিত্র লিবারেল কমিউনিস্ট ইউনিফাইড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট (ইউএমএল) পার্টির সমর্থন হারান। এই পার্টির নেতৃত্বে আছেন কে. পি. শর্মা অলি।
এর আগে দুবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অলি। গত জুনে মধ্যপন্থী নেপালি কংগ্রেস (এনসি) পার্টির সঙ্গে চুক্তি করে ইউএমএল। এর মধ্যে দিয়ে অলি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেন।
ক্ষমতা ধরে রাখতে পার্লামেন্টের ২৭৫ সদস্যের মধ্যে কমপক্ষে ১৩৮ জনের ভোটের দরকার ছিল দাহালের। কিন্তু পার্লামেন্টে শুক্রবার উপস্থিত ২৫৮ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে তার পক্ষে ভোট দেয় মাত্র ৬৩ জন। আর বিপক্ষে দেয় ১৯৪ জন। ভোটদানে বিরত ছিল একজন।
পার্লামেন্টের স্পিকার দেব রাজ ঘিমিরে ভোটাভুটির পর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের আস্থা ভোট প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।”
২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন দাহাল। তিনি তিনবার জোটের মূল অংশীদারদের পাল্টান। আর মোট পাঁচবার আস্থা ভোট হয়েছিল। এর মধ্যে শুক্রবারের ভোটে তিনি হারেন।
ইউএমএল নেতা যোগেশ ভট্টরাই বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কাটাতে নতুন জোটের প্রয়োজন হয়েছিল আমাদের।”
শুক্রবার ভোটের আগে দাহাল এক বক্তৃতায় বলেন, “অলির নেতৃত্বাধীন দুটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের জোট দেশে গণতান্ত্রিক চর্চার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এতে দেশে অস্থিতিশীলতা ও কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠা পেতে পারে।”
নেপালের পার্লামেন্টে এনসি হলো সবচেয়ে বড় দল। এরপরেই অবস্থান ইউএমএলের। আর তৃতীয় অবস্থানে দাহালের কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (মাওবাদী)।
তথ্যসূত্র : রয়টার্স।