নতুন অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের এই এডিপিতে বরাদ্দের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। মোট এডিপির প্রায় ২৭ শতাংশ বা ৭১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে এ খাতে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় আগামী অর্থবছরে উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য এ বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়। ঢাকার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে পরিকল্পনামন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুস সালাম অনুমোদিত এডিপির বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, নতুন এডিপিতে সরকারি তহবিল থেকে মোট বরাদ্দের ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং বৈদেশিক অর্থায়ন থেকে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দ প্রাক্কলন করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, তা চলতি অর্থবছরের বরাদ্দের চেয়ে ২ হাজার কোটি টাকা বেশি। চলতি বাজেটে এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।
মূলত অর্থসংকটের কারণেই এবার এডিপিতে বরাদ্দ খুব বেশি বাড়ানো হয়নি বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
আগামী ৬ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবেন। ৩০ জুন সেই বাজেট পাস হওয়ার পর ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।
এটি অর্থমন্ত্রী হিসেবে মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট। আর দেশের ৫৩তম এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৫তম বাজেট।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপিসহ নতুন বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
নিয়ম অনুযায়ী, অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের আগে এনইসি বৈঠকে তা অনুমোদন করিয়ে নিতে হয়। সেই প্রথা মেনেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এনইসি বৈঠকে নতুন এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নানা সংকট সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে। একদিকে স্বস্তি দিতে গেলে টান পড়ছে অন্য দিকে। কৃচ্ছ্রসাধনের পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হচ্ছে আইএমএফের শর্তের বিষয়েও। সব মিলিয়ে এবারের বাজেট কেমন হয়, তা নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে।
নতুন এডিপিতে বরাদ্দের দিক থেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতকে। মোট এডিপির প্রায় ২৭ শতাংশ বা ৭১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে এ খাতে। ঢাকার নতুন মেট্রোরেল প্রকল্প, পদ্মা রেলসেতুসহ গুরুত্বপূর্ণ চলমান বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে খাতটিতে। এসব প্রকল্প বরাদ্দের কারণে সার্বিকভাবে এ খাতের বরাদ্দ বেড়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা বা মোট বরাদ্দের ১৫ শতাংশের বেশি।
তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ শিক্ষা খাতে। এ খাতে আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩১ হাজার কোটি টাকা, যা মোট এডিপির প্রায় ১২ শতাংশ।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে মোটা দাগে ১৫টি খাত ৯৬ শতাংশের বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে।
অন্য খাতগুলোর মধ্যে গৃহায়ণ ২৪ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ খাতে ১১ হাজার ৮৯ কোটি টাকা এবং কৃষি খাত ১৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে।