Beta
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাড়াই আসছে নতুন নোট  

SS-taka-note-121224
[publishpress_authors_box]

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি বাদ দিয়ে টাকা ছাপানোর অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে এবার নতুন নকশা ও বৈশিষ্ট্যের নোট আসছে বাজারে।

রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এ তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা।

আগামী ছয় মাসের মধ্যে নতুন নকশায় টাকা ছাপার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে কাগুজে মুদ্রা থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি বাদ দিয়ে নতুন নোট চালুর আলোচনা চলে আসছিল সোশাল মিডিয়ায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি বাদ দিয়ে টাকার নোটে যুক্ত করা হবে ধর্মীয় স্থাপনা, ঐতিহ্যবাহী স্থানের ছবি ও জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি। প্রাথমিকভাবে ২০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের নকশা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

বাংলাদেশের মুদ্রা ছাপানোর কাজটি করে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লি., যা টাঁকশাল নামে পরিচিত। তবে টাকার নকশা প্রণয়ন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি। তাছাড়া কী পরিমাণ নোট বা মুদ্রা ছাপানো হবে তার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।

দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও ১৯৮৮ সালের জুন মাসে এক টাকা ছাপানোর মধ্য দিয়ে এ প্রেসের কার্যক্রম শুরু হয়।

দেশ স্বাধীনের পরও কিছুকাল পাকিস্তানি মুদ্রায় চলেছে লেনদেন। ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ প্রথম ভারতের সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেসের নকশা ও মুদ্রণে ১, ৫, ১০ ও ১০০ টাকার চার ধরনের নোট বাজারে ছাড়া হয়। কাগুজে এসব মুদ্রা ছাপা হয় ভারতের একটি প্রেস থেকে।

স্থানীয় শিল্পিদের দিয়ে প্রথম নকশা করা কাগুজে মুদ্রা বাজারে আসে ওই বছরের ২ জুন। ওই মুদ্রাগুলোর নকশা করেছিলেন কে জি মুসতাফা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে নতুন নোট ছাপতে। তার আগের অর্থবছরে খরচ ছিল ৩৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। সবশেষ নতুন নকশায় ২০০ টাকার নোট চালু হয় ২০২০ সালে।

কে জি মুসতাফার নকশা করা টাকায় প্রথম বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়, যা বাজারে আসে ১৯৭২ সালের ২ জুন। ওই সময় তিনি ১, ৫, ১০ ও ১০০ টাকার নোটের নকশা করেছিলেন। এর মধ্যে ৫, ১০ ও ১০০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করা হয়।

১৯৭৫ সাল-পরবর্তী সময়ে ১০০ টাকার যে নোটগুলো বাজারে ছাড়া হয়েছিল, তাতে বঙ্গবন্ধুর ছবি বাদ পড়ে। নতুন টাকায় যুক্ত হয় তারা মসজিদ।

এরপর ২০০১ সালের ১৫ মার্চ নতুন নকশায় আবারও ১০০ টাকার নোটে ফিরে আসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। তবে এরপর ২০০৬ সাল পর্যন্ত ১০০ টাকার নোটগুলোতে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিল না।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১০০ টাকাসহ সব ধরনের কাগুজে মুদ্রায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির প্রচলন করে। এই সিরিজের নোটগুলো বঙ্গবন্ধু সিরিজ নোট হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, ১৯৭৯ সালের ২০ আগস্ট ২০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া হয়। তাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ছিল না। ২০১২ সালে বাজারে ছাড়া ২০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখা যায়।

২০০০ সালের আগস্টে বাজারে ছাড়া নোটগুলোতে প্রথম ৫০০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করতে দেখা যায়। তবে এরপর ২০১১ সাল পর্যন্ত বাজারে ছাড়া ৫০০ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখা যায় না।

এক হাজার টাকার নোট প্রথমবারের মতো চালু হয় ২০০৮ সালে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। ওই নোটটির নকশায় স্থান পায় শহীদ মিনার। ২০১১ সালের ১১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ছবিসহ এক হাজার টাকার নোট বাজারে আসে।  

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত