সরকার পতনের পর থেকেই বিসিবি সভাপতি উধাও। নাজমুল হাসান পাপনের কোনও খোঁজ মিলছিল না এতদিন। অবশেষে বৃহস্পতিবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচালক তার খোঁজ না জানালেও নিশ্চিত করেছেন, বিসিবির সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন পাপন।
বৃহস্পতিবার বিসিবি পরিচালকদের সূত্রে নাজমুল হাসানের সভাপতি থেকে পদত্যাগের খবর প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সত্যিটা হলো মৌখিক সম্মতি দিলেও পাপন আনুষ্ঠানিক ভাবে লিখিত পদত্যাগ পত্র পাঠাননি। বোর্ড সভা হলে সেখানে সভাপতির পদত্যাগ পরিচালকদের সম্মতিক্রমে গৃহিত হবে।
এদিকে সভাপতির পদ ছাড়া মানেই পাপন বিসিবি ছেড়ে যাচ্ছেন, এমন নয়। তিনি থাকছেন বিসিবি পরিচালক হয়ে, যা বিসিবির ওই পরিচালকও নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “দেশের ক্রিকেটের উন্নতির স্বার্থে পাপন সাহেব সভাপতি পদ ছেড়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে চান।” বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, তিনি আগে পরিচালক পরে সভাপতি। ২৫ জন পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার পরই তাদের মধ্য থেকে একজনকে সভাপতি মনোনীত করা হয়।
তাহলে নতুন সভাপতি কে হবেন বা আসবে কিভাবে? বিসিবির ওই অভিজ্ঞ পরিচালক সকাল সন্ধ্যাকে বলেছেন, “জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে ব্যাপারটা জানানো হয়েছে। এখন তারাই বলুক আমরা কি করবো। সভাপতি পদত্যাগ করলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সহ-সভাপতির নেতৃত্বে বিসিবি পরিচালিত হওয়ার কথা। সেই সহ সভাপতিও আমাদের নেই। ক্রীড়া পরিষদ যেভাবে বলবে, সেভাবেই চলবে বিসিবি।”
ক্রীড়া পরিষদের আগে বিসিবির গঠনতন্ত্র কি বলছে, সেটা দেখা যাক। গঠনতন্ত্রের ১৩ অনুচ্ছেদের ২ এর “ক” ধারায় পরিচালনা পর্ষদ গঠন অংশে বলা হয়েছে, “সভাপতি পদের প্রার্থীকে অবশ্যই পরিচালক হতে হবে। সভাপতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক নির্বাচিত হবেন। সহ-সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।” এই ধারা মানলে, বিসিবির নতুন সভাপতি নিয়ে কোন ঝামেলাই থাকে না। ২৫ পরিচালকের ভোটে তারা নতুন সভাপতি চূড়ান্ত করতেই পারে।
বিসিবির আরেক পরিচালক সকাল সন্ধ্যাকে বলেছেন, “সভাপতি না থাকলে, নতুন সভাপতি যেভাবে নির্বাচিত হয় সেভাবেই হবে। আমি চেষ্টা করেছি উনার (নাজমুল হাসান) সঙ্গে কথা বলতে কিন্তু ফোনে পাইনি। পদত্যাগ বা এ সংক্রান্ত কিছু আমি সরাসরি শুনিনি, পরে জেনেছি। আমরা এখন সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। যদি সরকার কোন সিদ্ধান্ত দেয় এবং তা যদি আমাদের মানতে হয় সেটাও আমাদের (বিসিবি) গঠনতন্ত্র অনুযায়ী-ই হতে হবে। এছাড়া তো উপায় নেই।”
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হলে বিষয়টা খুব সহজেই মিটে যায়। কিন্তু এই অস্থির পরিস্থিতিতে সহজ কাজও সহজভাবে করতে চাইছে না বিসিবি। তারা তাকিয়ে আছে ক্রীড়া পরিষদের দিকে। বিসিবিকে সভাপতি নির্বাচন করতে হবে দ্রুত। কারণ তারা নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে আইসিসি থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছে।