সোশাল মিডিয়াকে সংবাদ কন্টেন্টের জন্য মিডিয়া কোম্পানিকে অর্থ দিতে বাধ্য করতে আইন করতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ডের ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল জোট সরকার।
দেশটির গণমাধ্যম কোম্পানিগুলো সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্মের বিজ্ঞাপন থেকে আসা আয়ের একটা অংশ তাদেরও বলে দাবি করে। এরপরই এ নিয়ে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
নিউজিল্যান্ডের যোগাযোগ মন্ত্রী পল গোল্ডস্মিথ বলেন, “আমাদের দেশিয় মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে তাদের নিজেদের সংবাদ কন্টেন্ট থেকে আয়ের সুযোগ করে দিতে পূর্ববর্তী লেবার সরকারের আনা গত বছরের ফেয়ার ডিজিটাল নিউজ বার্গেইনিং বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হবে।
”প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো এটিকে অস্ট্রেলিয়ার ডিজিটাল বার্গেইনিং আইনের আরও কাছাকাছি নিয়ে যাবে।”
অস্ট্রেলিয়ায় ২০২১ সালের মার্চ কার্যকর করা একটি আইনে দেশটির সরকারকে ফেসবুকের মালিক মেটা ও গুগলের মালিক অ্যালফাবেটের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টদের বাধ্য করার ক্ষমতা দেওয়া হয়। কোম্পানিগুলো মিডিয়া আউটলেটগুলোকে অর্থ দেওয়ার বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে।
তবে মেটা বলেছে, মেটার প্ল্যাটফর্মগুলো কীভাবে কাজ করে, তাদের স্বেচ্ছাসেবী প্রকৃতি, ব্যবহারকারীদের পছন্দ এবং মেটা নিউজ আউটলেটগুলোকে বিনামূল্যে যে সেবা সরবরাহ করে সেসব বিবেচনায় নেওয়া হয়নি নিউজিল্যান্ডের বিলটিত ।
মেটার এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, “এই বিলটি সামনে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরাও সরকার এবং প্রকাশকদের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আরও উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ হতে থাকব।”
গুগল তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
কানাডাও ২০২৩ সালে অনুরূপ আইন চালু করার পরে ফেসবুক সেদেশে সংবাদ কন্টেন্ট দেখানো বন্ধ করে দেয়।
মেটা বলছে, তারা অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়া কোম্পানিগুলোকেও সংবাদ কন্টেন্ট দেখানোর জন্য অর্থ প্রদান বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে এবং সরকার হস্তক্ষেপ করবে কিনা তা বিবেচনা করছে।
মন্ত্রী গোল্ডস্মিথ বলেছেন, প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো কোন কোন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আইনের আওতায় আসবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে যোগাযোগ মন্ত্রীর। বিলটির কর্তৃপক্ষ হিসেবে একজন স্বাধীন নিয়ন্ত্রকও নিয়োগ করা হবে।
গোল্ডস্মিথ আরও বলেন, শাসক জোটের অংশ ডানপন্থী এসিটি নিউজিল্যান্ড পার্টি বিলটিকে সমর্থন করবে না। তার মানে এটি আইনে পরিণত করতে অন্য দলের সমর্থন লাগবে।
বিরোধী লেবার পার্টি বলছে, বিলটিতে আনা সংশোধনীগুলো তারা পরীক্ষা করে দেখবে। তবে তারা বিলকে সমর্থন করে।
লেবার পার্টির মিডিয়া ও সম্প্রচার মুখপাত্র উইলি জ্যাকসন এক বিবৃতিতে বলেন, “আমি স্বস্তি বোধ করছি যে, বর্তমান সরকার অনলাইনে কাজ করা সংবাদ কোম্পানিগুলোর জন্য মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপকে আরও ন্যায্য করাতে আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা বোধ করছে।”
তথ্যসূত্র: রয়টার্স