নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে একটি বাসায় বিছানায় গলাকাটা স্ত্রী ও সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত স্বামীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশের ধারণা।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের বার্লিংটনের মোড়ের দক্ষিণে বসুন্ধরা কলোনির কচি ডাক্তারের বাসার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মেহেদি হাসান শুভ (২২) সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের প্রয়াত দুলাল মিয়ার ছেলে ও তামান্না ইসলাম পিনু (১৬) নোয়াখালী পৌর এলাকার লিটন মিয়ার মেয়ে। তারা সম্পর্কে খালাতো ভাই-বোন। প্রেমের সম্পর্কের পর গত বছর আগস্টে তারা বিয়ে করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক দিন আগে ওই দম্পতি বাসাটিতে উঠেন। নিহত তামান্নার বড় ভাই হোসাইন আহম্মদ নোমান সোমবার সকালে তাদের বাসায় এসে ঘরের দরজা বন্ধ পান। অনেক ডাকাডাকির পরও কোনও সাড়া না পেয়ে তিনি পাশের ভবনে গিয়ে ওই বাসার জানালা খুলে মেহেদীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন।
খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানসহ, পিবিআই, সিআইডি, ডিবি পুলিশ ও সুধারাম থানা পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর আগস্টে বিয়ের পর শুভ ও পিনু ঢাকায় ছিলেন। সম্প্রতি মাইজদীর বসুন্ধরা কলোনিতে শাশুড়ির বাসায় থাকা শুরু করেন শুভ। ওই বাসায় নিহত পিনুর মা ও ভাইও থাকতেন।
পুলিশের ধারণা, সোমবার সকাল ৭টার আগে-পরে স্বামী শুভ তার স্ত্রী পিনুকে গলাকেটে হত্যা করেন। এরপর বাসার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে দেখে বিছানায় পিনুর গলাকাটা মরদেহ এবং পাশেই হত্যায় ব্যবহৃত বটি পড়ে আছে। আর বিছানার উপরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে স্বামী শুভর মরদেহ। ওই কক্ষের দেওয়ালে রক্ত দিয়ে কিছু লেখা দেখা যায়।
শুভর ডায়েরিতে তার হাতের লেখার সঙ্গে দেওয়ালের লেখার মিল রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
এমন ঘটনায় হতবিহ্বল স্থানীয়রা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আপাতদৃষ্টিতে দাম্পত্য কলহের কারণে স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে মনে হচ্ছে। তবে তৃতীয় কোনও পক্ষের এর সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
দুপুর ১২টার দিকে মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেন জানান পুলিশ সুপার।