সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ টি-টোয়েন্টি ছাড়ছেন কাছাকাছি সময়ে। এমন দুই সিনিয়র খেলোয়াড়ের বিকল্প এখনও তৈরি হয়নি বাংলাদেশে। তবে অলরাউন্ডার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজ তাদের একজনের জায়গাটা পূরণ করতেই পারেন।
সেই মিরাজ টি-টোয়েন্টিতে ফিরেছেন ১৫ মাস পর। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ১ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি করেছিলেন অপরজিত ৩৫ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে খরুচে থাকলেও ব্যাট হাতে করেছিলেন ১৬। গোয়ালিয়রে ৭ নম্বর আর দিল্লিতে মিরাজ নেমেছিলেন ৫ নম্বরে।
২০২২ সালে টানা পাঁচ ম্যাচ আবার ওপেন করেছিলেন মিরাজ। তাই প্রশ্ন, তার আসল জায়গাটা কোথায়? তবে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ের তিনটি স্কিলই থাকায় তাকে ঘিরে বিকল্প খুঁজছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাস সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে গেলেন সেটাই।
হায়দরাবাদে শনিবার শেষ টি-টোয়েন্টির আগে আজ (শুক্রবার) সংবাদ সম্মেলনে পোথাস বললেন, ‘‘মিরাজের মতো কাউকে পেয়ে আমরা দারুণ ভাগ্যবান কারণ সে ব্যাট করতে পারে টপ ও মিডলঅর্ডার দুই জায়গাতেই। বলও করতে পারে ভালো। শেষ ম্যাচটা শুধু শেষ ম্যাচই, এটা হতেই পারে কারণ এটা টি-টোয়েন্টি (ব্যর্থ ছিলেন)। সে আমাদের বিকল্পের সুযোগ দিচ্ছে। কারণ তার তিনটা স্কিল রয়েছে। যেহেতু সে বিশ্বকাপে ছিল না তাই তাকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করে দেখব যেন একটা রোল খুঁজে পাই। যেখানে সে ভবিষ্যতে খেলবে। বর্তমানে আমরা অনেক ভাগ্যবান তাকে পেয়ে, ওকে যেখানে খুশি খেলাতে পারছি।’’
ভারত সফরে ব্যর্থ লিটন দাস। সমালোচনাও হচ্ছে তাকে ঘিরে। এ নিয়ে পোথাস জানালেন, ‘‘লিটন কুমার দাস বিশ্বের সেরা দুই উইকেটরক্ষকের একজন। সে আসলে রোবট নয়, মানুষ। মনে রাখতে হবে ধারাভাষ্যকাররা কথা বলার জন্য টাকা পেয়ে থাকেন। আমরা তাদের সব কথা মেনে নিব না। ওটা তাদের কাজ যা সম্মান করি। আমরা মনে হয় তাদের কথা একটু বেশিই শুনছি।’’
পাকিস্তানে ভালো করলেও ভারত সফরে ভরাডুবি হয়েছে বাংলাদেশের। এতদিন পরে এসেও এই ব্যর্থতা থেকে শেখার কথাই বললেন পোথাস, ‘‘ভারতে অনেক দলই এসে বাজে সফর কাটিয়ে যায়। আমাদেরকে যেদিকে নজর দিতে হবে তা হচ্ছে শিখতে পারছি কিনা। আমরা কিছুটা ভাগ্যবানও যে ভারত সফরে আসতে পেরেছি। কারণ এখানে অনেক কিছু শেখা হয়েছে আমাদের। শিক্ষাটা সৎভাবে হতে হবে। ভারতের মত জায়গায় এসে আপনি কী শিখবেন? যা শিখবেন সেটাই আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কারণ ভারত আপনাকে জানিয়ে দেবে আপনার কোথায় উন্নতি করতে হবে। এমনকি ভারতের সূর্যকুমার যাদবও ম্যাচ শেষে বলেছিল সে অনেক কিছু শিখেছে, বোলারদের কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, সবসময় আপনাকে শিখতে হবে।’’
টি-টোয়েন্টিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ছক্কা মারার সামর্থ্য নিয়ে জিজ্ঞেস করলে পোথাস তুলে ধরলেন দুই দলের খেলোয়াড়দের ওজনের পার্থক্য, ‘‘কঠিন কথা বললেন। একজন যদি ৯৫-১০০ কেজি ওজনের হয় আর আরেকজন যদি হয় ৬৫ কেজি, তাহলে একজন তো বেশি দূরে বল পাঠাবেই। অবশ্যই এখানে টাইমিং আছে, টেকনিক আছে, সব আছে। আমরা প্রতিনিয়ত কাজও করে যাচ্ছি।’’
ভারতের উন্নতির জন্য আইপিএলের কথাও স্মরণ করিয়ে দিলেন পোথাস, ‘‘আইপিএল খেলোয়াড়দের তৈরি করে দেয় আন্তর্জাতিক মঞ্চের জন্য। তাই এখানে পুরো ভিন্ন দুটি জিনিসের তুলনা করছেন যে ভারতের কটি ছক্কা আর আমাদের কটি ছক্কা। এটা অনেকটা এমন হয়ে গেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ কয়টি ছক্কা মেরেছে আর আমরা কয়টি। তারা অনেক শক্তিশালী ক্রিকেটার। আমরা স্ট্রেংথ এবং কন্ডিশনিংয়ের দিকে উন্নতি করছি। তবে জেনেটিকস নিয়ে তো আর লড়াই করতে পারবেন না।’’