Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

রবিবার থেকে স্বাভাবিক হবে এনআইডি সেবা

ss-nid-card-2024
[publishpress_authors_box]

জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলসহ দুই দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি আপাতত শিথিল করেছেন আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এর ফলে ঢাকার নির্বাচন কমিশনে চালু হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা কার্যক্রম। তবে পুরোপরি এ সেবা চালু হতে রবিবার পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন এনআইডি অনুবিভাগের আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেসের (আইডিইএ)-২ প্রকল্পের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন।

বুধবার এই প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাকা কর্মবিরতির কারণে সারাদেশে বন্ধ হয়ে পড়েছিল সেবা কার্যক্রম। পরে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঢাকায় কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেন প্রকল্পের কর্মচারীরা।

কর্মসূচি সফল করতে সারাদেশ থেকে ঢাকায় এসেছিলেন প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অনেকেই সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছতে পারেননি। এরপর শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি। ফলে পুরোদমে এ সেবার সুফল ভোগ করতে সেবাদানকারীদের অপেক্ষা করতে হবে রবিবার পর্যন্ত।

জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা কার্যক্রম চালু হয়েছে কিনা জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ঢাকার অফিসে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।”

নির্বাচন ভবনের সামনে বেশকিছু লোকের অবস্থানের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “তারা আমাদের লোক নয়। আইসিটি মন্ত্রণালয়ের লোকজন হতে পারে।”

কর্মবিরতি সম্পর্কে প্রকল্পের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আমরা মূলত আজকে কর্মসূচী পালন করছি না। গতকাল আমরা আমাদের প্রকল্প পরিচালককে স্মারকলিপি দিয়েছি। পরে তা ইসি সচিবলায়ে পাঠানো হয়। কমিশন এই স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হবে।”

এনআইডি কার্যক্রম সেবা স্বাভাবিক হতে রবিবার পর্যন্ত সময় লাগবে বলেও জানান। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢাকায় অবস্থান করা ও সময়মতো ফিরতে না পারার কথা জানিয়েছেন।

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এই সরকার কাজ শুরুর পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দাবি-দাওয়া আদায়ের হিড়িক শুরু হয়। প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ ড. ইউনূসের বাসস্থান রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়ে নিজেদের দাবি জানাচ্ছে। সেইসঙ্গে জাতীয় প্রেসক্লাব, কারওয়ান বাজার মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে দাবি নিয়ে দাঁড়াচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

একইভাবে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃষ্টিতে ভিজে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন আইডিইএ-২ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা জানিয়েছিলেন, কর্মবিরতি কর্মসূচি কেবল ঢাকার নির্বাচন ভবনে নয়, সারাদেশের সব নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে পালিত হচ্ছে।

আইডিইএ-২ প্রকল্পের ৯-২০ গ্রেড পর্যন্ত সব কর্মকর্তা-কর্মচারী দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। 

মঙ্গলবার রাতে এক বৈঠক শেষে দুই দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল।

দুই দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখা এবং আইডিইএ প্রকল্পের সব আউটসোর্সিংয়ে কর্মরতদের চাকরি রাজস্বে স্থানান্তর।

প্রকল্পটির আওতায় জনবলের সংখ্যা ২ হাজার ২৬০ জন। তাদের মাধ্যমেই এনআইডির যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশন।

গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার এনআইডি অনুবিভাগ নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে নেওয়ার জন্য স্বতন্ত্র একটি আইন প্রণয়ন করে।  

তবে সেখানে বলা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে কার্যক্রম না নেবে, ততদিন পর্যন্ত তা ইসির অধীনেই থাকবে। আইনটি করার সময় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ ও সাবেক নির্বাচন কমিশনাররা এনআইডি কার্যক্রম ইসির অধীনে রাখার পক্ষেই মত দিয়েছিলেন।

তাদের যুক্তি ছিল, যেহেতু ভোটার তালিকার ভিত্তিতে এনআইডি সরবরাহ করা হয়, সেহেতু ইসির অধীনে এই কার্যক্রম থাকাই নিরাপদ।

এছাড়া ইসির এই কার্যক্রমের জন্য রয়েছে দেড় যুগের দক্ষতা ও অবকাঠামো। নতুন করে অন্য কোনও দপ্তরের অধীনে নিলে নতুন করে লোকবল ও অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। এতে রাষ্ট্রের ব্যয় ও নাগরিকদের ভোগান্তি বাড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত