বাংলাদেশিদের মতো জাপানের নাগরিকদেরও প্রধান খাদ্য ভাত। কিন্তু দেশটির বাজারে প্রায় কোনও চাল কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না।
সম্প্রতি বড় ধরনের ভূমিকম্প ও সিরিজ ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসের পাশাপাশি সপ্তাহব্যাপী ছুটির আগে বেশি করে চাল কিনে ঘরে মজুত করছিল জাপানের মানুষ।
ফলস্বরূপ দেশটির বাজার প্রায় চালশূন্য হয়ে পড়েছে। অবশেষে জাপান সরকার মঙ্গলবার জনগণকে আতঙ্কিত হয়ে বেশি চাল না কেনার জন্য সতর্ক করেছে।
টোকিওর জনপ্রিয় ফ্রেসকো সুপারমার্কেট চেইনের একটি শাখার একজন কেরানির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ওই কেরানি বলেন, “আমরা এই গ্রীষ্মে চাহিদার কেবলমাত্র অর্ধেক পরিমাণ চাল সংগ্রহ করতে পেরেছি এবং চালের ব্যাগগুলো দ্রুত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।”
ফ্রেসকো সুপারমার্কেটের ওই কর্মী আরও জানান, প্রতিদিনের চালের মজুত সাধারণত দুপুরের মধ্যেই ফুরিয়ে যাচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুতে জাপান সরকার দেশটিতে বড় ধরনের ভূমিকম্প এবং বেশ কয়েকটি টাইফুনের পূর্বাভাস দেয়।
এরপর থেকেই জনগণ আতঙ্কে বাজার থেকে বেশি করে চাল কিনে ঘরে মজুত করতে থাকে।
জাপানজুড়ে দোকানে চাল ফুরিয়ে যাওয়ার বা চালের ঘাটতির আরেকটি কারণ হল ওবন উৎসবের ছুটি।
এ ছাড়াও গরম আবহাওয়া এবং খরার কারণে ফসলের কম ফলন, সেইসঙ্গে রেকর্ড সংখ্যক বিদেশি পর্যটকের আগমনের ফলেও জাপানে চালের ঘাটতি দেখা দেয়।
টোকিওর একটি মুদি দোকানের সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, “সবাই যাতে চাল কিনতে পারে সেজন্য দয়া করে পরিবার প্রতি দিনে এক বস্তার বেশি চাল কিনবেন না।”
টোকিওর আরেকটি দোকানের একজন কর্মী এএফপিকে বলেন, তাদের দোকান এবার কোনও চাল কিনতে পারেনি। সহসাই তাদের নতুন করে চাল কেনার কোনও সম্ভাবনাও নেই।
জাপানের কৃষিমন্ত্রী তেতসুশি সাকামোতো জনগণকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, শিগরিগই চালের ঘাটতি মেটাতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দেশটি ১৯৯৯ সালের পর এ বছরের জুনে চালের সর্বনিম্ন মজুত দেখেছে। তবে সম্প্রতি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চালের পর্যাপ্ত মজুত আছে।
জাপানের খামার মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, “ইতোমধ্যে নতুন ফসল কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে এবং সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ মাঠের ফসলের ৪০ শতাংশ বাজারে চলে আসবে।”
এদিকে বুধবার দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, শানসান নামের একটি টাইফুন আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানে আঘাত হানতে যাচ্ছে।