আমাদের শরীরের অন্যতম সংবেদনশীল অংশের একটি আমাদের নাক। শুধুমাত্র গন্ধ শুঁকেই তো কত মানুষের মাথা ধরে যায়। পাশের বাড়িতে কী রান্না হচ্ছে তাও ঠিকঠাক শুধু গন্ধ শুঁকেই আমরা বলে দিতে পারি। এমনই শক্তিশালী এই নাক।
কিন্তু কতটা?
গবেষণা বলছে, মাত্র একবার গন্ধ শুঁকেই সেকেন্ডেরও কম সময়ে আমাদের ইন্দ্রিয় বুঝে যায় ঘ্রাণটি কিসের। ঘ্রান শুঁকে আন্দাজ করতে পারার এই ক্ষমতা নাকি রঙ শনাক্ত করতে পারার সমান। অথচ প্রচলিত আছে, ঘ্রাণ দিয়ে শনাক্ত করতে পারার ক্ষমতা নাকি ধীর গতির।
নেচার হিউম্যান বিহেইভিয়ার জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা দাবী করছে, গন্ধের সূক্ষ্ম তারতম্য পার্থক্য করতে একজন ব্যক্তি সময় নেয় মাত্র ৬০ মিলিসেকেন্ডে।
গবেষণাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বেইজিংয়ের চাইনিজ অ্যাকেডেমি অব সাইন্স এর প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ড. ওয়েন ঝৌ। গবেষণার অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা পরপর দুটি গন্ধের মধ্যে পার্থক্য করতে সময় নেয় মাত্র ৬০ মিলি সেকেন্ড।”
ঝৌ বলেন চোখের পলকের সঙ্গে এই ঘটনার তুলনা টেনে বলেন, “চোখের পলকের সময়কাল প্রায় ১৮০ মিলিসেকেন্ড”। অর্থাৎ মানুষ চোখের পলকেরও কম সময়ে একটি গন্ধ থেকে আরেকটি গন্ধ আলাদা করতে পারে। যা কিনা সত্যিই বিস্ময়কর।
গবেষণার এই ফলাফল প্রচলিত ধারণা তো বটেই, অতীতের গবেষণাগুলোকেও চ্যালেঞ্জ করেছে। আগের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, অংশগ্রহণকারীরা একই সময়ে বিভিন্ন গন্ধের তারতম্য বুঝতে সময় নেয় ১,২০০ মিলি সেকেন্ড!
নিউ ইয়র্কের লেঙ্গন হেলথের নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড ফিজিওলজি ডিপার্টেমেন্টের অধ্যাপক ড. দিমিত্র রিনবার্গ ঠিক একই দাবী করেছেন। মানব আচরণ নিয়ে এক সম্পাদকীয়তে তিনি এমন তথ্যই দিয়েছেন।
ড. সন্দ্বিপ রবার্ট দত্ত এ ব্যাপারে হাজির করেছেন চমকপ্রদ পর্যবেক্ষণ। তার মতে, একবার শুঁকেই ভিন্ন ভিন্ন গন্ধ আলাদা করতে পারার এই ক্ষমতা আছে বন্যপ্রাণীর। তার অনুমান, এই ক্ষমতা দিয়েই বন্যপ্রাণীরা বুঝতে পারে গন্ধটি কিসের। শুধু তাই নয়, তারা গন্ধের উৎস’ও চিহ্নিত করতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন