জিতেছেন টেনিসের সব শিরোপই। সর্বোচ্চ ২৪টি গ্র্যান্ড স্লামও তার। তবে আফসোস হয়েছিল অলিম্পিকটা। এর আগে চারবার অংশ নিয়ে জেতা হয়নি সোনা। অবশেষে পঞ্চম অলিম্পিকে সোনার স্বপ্নপূরণ হলো সর্বকালের অন্যতম সেরা এই টেনিস তারকার।
রোঁলা গারোয় আজকের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে জোকোভিচ ৭-৬ (৭/৩) ও ৭-৬ (৭/২) গেমে হারান সময়ের অন্যতম সেরা কার্লোস আলকারজকে। স্পেনের এই তারকার বিপক্ষে ম্যাচ পয়েন্ট নিশ্চিতের পরই ভরা গ্যালারির সামনে আবেগি হয়ে পড়েছিলেন জোকোভিচ।
উচ্ছ্বাস করেন সার্বিয়ার পতাকা নিয়ে। উদযাপনের অংশে সামিল ছিল গ্যালারিতে থাকা তার পরিবারও। সোনা জিতে জোকোভিচ বললেন, ‘‘আমার হৃদয়, আত্মা সবকিছু উজার করে খেলেছি এই সোনাটার জন্য। এটা করেছি আমার দেশ সার্বিয়ার জন্য।’’
অলিম্পিক সোনা জেতায় অনন্য একটা রেকর্ডেও নাম লিখিয়েছেন জোকোভিচ। বছরের চারটি গ্র্যান্ড স্লামের পাশাপাশি অলিম্পিক সোনা জয়ের কীর্তি ছিল রাফায়েল নাদাল, আন্দ্রে আগাসি, সেরেনা উইলিয়ামস ও স্টেফি গ্রাফের।
আজ তাদের পাশে বসলেন জোকোভিচও। অথচ গত ফ্রেঞ্চ ওপেনে চোট পাওয়ায় সরিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। শঙ্কা জেগেছিল অলিম্পিক মিস করার। কিন্তু তিনি যে চ্যাম্পিয়ন। আর চ্যাম্পিয়নরা ফিরে আসে এভাবেই।
২৪ গ্র্যান্ড স্লামের চেয়ে অলিম্পিক সোনা জয়কেই ক্যারিয়ারের সেরা অর্জন বললেন জোকোভিচ, ‘‘কোনও তর্ক ছাড়াই এটা আমার অন্যতম সেরা সাফল্য। ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারে সবই জিতেছি, ডেভিস কাপও জিতেছি। তবে ৩৭ বছর বয়সে সার্বিয়ার হয়ে অলিম্পিক সোনা জেতা আমার কাছে বিশেষ কিছু।’’
তিনিই কী সর্বকালের সেরা? এমন প্রশ্নে জোকোভিচ বললেন, ‘‘আমি জানি না। যা পেয়েছি এজন্য আমি গর্বিত। দেশের হয়ে প্রথম সোনার পদক জিততে পেরে খুশি। কার্লোস আর নাদাল স্পেনের হয়ে খেলার জন্য গর্ববোধ করে। মারে গ্রেট ব্রিটেনের হয়ে খেলতে পেরে গর্বিত। ঠিক তেমনই সুইজারল্যান্ডের হয়ে রজার ফেদেরার। সোনা জেতার পর ওদের সবার আবেগ আপনারা দেখেছেন। আসলে এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’’
দুটি সেটই টাইব্রেকারে যাওয়া বলছে কতটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। প্রথম সেট গড়ায় ৯৪ মিনিট। প্রথম সেটে জোকোভিচ পাঁচটি এবং আলকারাজ আটটি ব্রেক পয়েন্ট পেয়েছিলেন। কেউই কাজে লাগাতে পারেননি। তবে স্নায়ুর চাপ ধরে রেখে শেষ হাসিটা জোকোভিচেরই।
দ্বিতীয় রাউন্ডে জোকোভিচ পেয়েছিলেন কিংবদন্তি রাফায়েল নাদালকে। তবে এই নাদাল অতীতের নাদাল ছিলেন না, ছিলেন চোট জর্জর। লাল সুরকির কোর্টের রাজাকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন জোকোভিচ। কোয়ার্টার ফাইনালে গ্রিসের স্টেফানোস সিসিৎপাসকেও পাত্তা দেননি। এরপর আজ ফাইনালে ৩৭ বছর বয়সেও ২১ বছরের আলকারাজকে যেভাবে হারালেন, তাতে বিশেষজ্ঞরা সর্বকালের সেরা হওয়ার আলোচনা করতেই পারেন তাকে নিয়ে।