যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা সব চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে দেশটি থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর শুল্ক বসিয়েছে চীন সরকার। এর মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশ দুটির মধ্যে ফের বাণিজ্য যুদ্ধের সূচনা হলো।
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কানাডা, মেক্সিকো ও চীন থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর শাস্তিস্বরূপ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেছিলেন, যেহেতু দেশ তিনটি যুক্তরাষ্ট্রে আসা অবৈধ অভিবাসী ও মাদক পাচারের বিষয়ে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তাই ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসবে।
কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর এই শুল্ক কার্যকরের ঠিক আগ মুহূর্তে অবৈধ অভিবাসী ও মাদক পাচারের বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম পারদো।
এই দুই রাষ্ট্রনেতার কাছ থেকে অবৈধ অভিবাসী ও মাদক পাচারের বিষয়ে আশ্বাস পেয়ে ৩০ দিনের জন্য তাদের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন ট্রাম্প। তবে চীনের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক স্থগিত বা প্রত্যাহার কোনোটিই তিনি শেষ পর্যন্ত করেননি।
এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক বসার কয়েক মিনিটের মধ্যে দেশটি থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক বসায় চীন।
একই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগও তোলে বেইজিং।
এক বিবৃতিতে চীন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, “চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নীতিমালার গুরুতর লঙ্ঘন।
“এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান তো হবেই না, বরং চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা হুমকির মুখে পড়বে।”
যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের বিষয়ে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল, কৃষি সরঞ্জাম ও কয়েকটি স্বয়ংক্রিয় যানের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসবে।
এছাড়া চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কাস্টমস প্রশাসন পৃথক বিবৃতিতে বলেছে, ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ টাংস্টেন, টেলুরিয়াম, মলিবডেনাম ও রুথেনিয়াম সম্পর্কিত পণ্য রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
এর আগে ২০১৮ সালে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে চীনের সঙ্গে টানা দুই বছর বাণিজ্য যুদ্ধ চালিয়েছিল। এর ফলে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিশ্ব অর্থনীতি।