সরকার পতনের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে দেখা যায়নি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে। যদিও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় করা বেশ কয়েকটি মামলায় আসামি করা হয়েছে তাকে।
অবশ্য ওবায়দুল কাদেরকে না পেলেও পাওয়া গেছে তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আবদুল মতিনকে। রবিবার রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের চর ওয়াশপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আব্দুল মতিন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানার চর খাগকাটা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
মতিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সরকারি ইস্পাহানি কলেজের শিক্ষার্থী রিয়াজ হোসেন হত্যা মামলায়। মঙ্গলবার পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তিনদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সালেহের আদালতে মতিনকে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক মো. ইলিয়াস হোসেন।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ইকবাল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল কেরানীগঞ্জের আরশি নগরে সন্ত্রাসীরা তার ছত্রছায়ায় সব ঘটনা ঘটিয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হয়।
ওই এলাকায় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সন্ত্রাসীরা আবদুল মতিনের ছত্রছায়ায় থেকে কাজ করে এমন অভিযোগ করে পিপি বলেন, “তার হুকুমে ভিকটিম রিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে জীবন কেড়ে নিয়েছে বহুজনের। তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।”
তবে আবদুল মতিনের আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চান। তিনি বলেন, “আবদুল মতিন মোহাম্মদপুরে বাস করেন। তিনি কেরানীগঞ্জ যাননি, বসবাসও করেননি। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। মামলার এজাহারে নামও নেই। আর ঘটনাস্থলেও ছিলেন না। তিনি অসুস্থ। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি, প্রয়োজনের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।”
দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই কেরানীগঞ্জ মডেল থানার শাক্তা ইউনিয়নের আরশিনগর এলাকায় বৈষম্য বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেন ইস্পাহানি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াজ হোসেন। ওই সময় আসামিদের ছোড়া গুলি তার মাথার পিছনে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে মাঠিতে লুটিয়ে পড়ে সে। পরবর্তীতে ১৯ এ জুলাই সন্ধ্যা ৬ টায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এ ঘটনায় গত ২৬ আগস্ট নিহতের চাচা রমজান আলী শওকত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।