প্রথম দেখায় হলিউডের কোন সিনেমার দৃশ্য ভেবে ভুল করতে পারেন। সাদা চুলের মাঝ বয়সী কোন গ্যাংস্টার – এক হাত লম্বা পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে আছেন নিশানা লক্ষ্য করে। চোখে প্রেসক্রাইবড চশমায় লাগছে নিপাট ভদ্রলোক। আবার পকেটে হাত গুজে রাখার ভঙ্গি দেখে গ্যাংস্টারই মনে হবে।
নেহায়ত চারপাশে প্যারিস অলিম্পিকের আবহ ছিল, আর তার সাদা টি-শার্টে লেখা ছিল তুরস্ক। নয়তো সিনেমার দৃশ্যের সঙ্গে কোন অমিল ধরাই যেত না। যার কথা বলা হচ্ছে, তিনি তুরস্কের ইউসুফ ডিকেচ। প্যারিস অলিম্পিকে ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ইভেন্টে অংশ নিচ্ছেন।
এই ইভেন্টে অংশ নেওয়া অ্যাথলেটদের জন্য আলাদা পোশাক আছে। নিশানা ঠিক রাখতে এক চোখ ঢেকে রাখার চশমাও পরতে হয়। শব্দ থেকে বাঁচতে কানে সাউন্ডপ্রুফ এয়ারবাড পরতে হয়। কেউ কেউ ক্যাপ পরে নেন। কিন্তু ইউসুফের কিছুই লাগেনি। সাদামাটা ভাবে এলেন, শ্যুট নিলেন আর রৌপ্য পদক জিতে গেলেন।
৫১ বছর বয়সী এই শ্যুটার জুটি সেভাল লাডা তারহানকে নিয়ে জিতেছেন ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের মিশ্র ইভেন্টের রূপা। তবে ইউসুফকে নিয়ে আলোচনার ঝড় তার সাফল্যের কারণে উঠেনি। যে ভঙ্গিতে ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন তার কারণেই রাতারাতি নেট দুনিয়ায় সেনসেশন হয়ে গেছেন।
এমন ক্যাসুয়াল ভঙ্গিতে একটি অলিম্পিক ইভেন্টে অংশ নিতে কোন অ্যাথলেটকে এই প্রথম দেখল বিশ্ব। তাই নেট দুনিয়ায় দারুণ মজা করছেন সবাই। এক্স প্লাটফর্মে কেউ লিখেছে, “মনে হচ্ছে বয়স্ক কোন বাবা তার মেয়েকে স্কুল থেকে বাসায় নিতে এসেছিলেন কিন্তু তার হাতে বন্দুক দেওয়া হয় আর তিনি রূপা জিতে গেলেন।”
একজন লিখেছেন, “তুরস্ক সম্ভবত ৫১ বছর বয়সী কোন স্পাইকে অলিম্পিকে পাঠিয়েছে। তাই তার কোন বাড়তি কিছুর দরকার হয়নি।” স্বয়ং ইউসুফ বলছেন, “আমি ন্যাচারাল শ্যুটার। আমার বাড়তি কোন সরঞ্জামাদির দরকার পরে না।”
এই ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছে সার্বিয়ার শ্যুটার অরোনভিচ জোরানা ও মিকেচ দামির। তুরস্কের দুই প্রতিপক্ষকে ১৬-১৪ ব্যবধানে হারিয়েছেন তারা। ব্রোঞ্জ জিতেছে ভারত।