Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫

দেশের পেঁয়াজ দিয়েই ৪-৫ মাস চলবে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
[publishpress_authors_box]

দেশে পেঁয়াজের মূল মৌসুম শুরু হয়েছে। তাই আগামী ৪-৫ মাস যে পরিমাণ পেঁয়াজ লাগবে তার জন্য নিজেদের উৎপাদিত পেঁয়াজ যথেষ্ট বলে মনে করছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

রবিবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত ‘নিত্যপণ্যের দামের ওপর সিন্ডিকেট ও প্রতিযোগিতার প্রভাব’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিলেও চুক্তি অনুযায়ী ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ দেবে উল্লেখ করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “নতুন করে ভারত সরকার যে নীতি নিয়েছে, সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এর জন্য আমাদের দেশে বড় কোনও প্রভাব পড়বে না।

“কারণ, আমাদের এখানে ইতোমধ্যে পেঁয়াজের মূল মৌসুম শুরু হয়েছে। আগামী ৪-৫ মাস যে পেঁয়াজ লাগবে তার জন্য আমাদের নিজেদের পেঁয়াজ যথেষ্ট।”

শিগগিরই দেশের বাজারে ভারতের ওই পেঁয়াজ পাওয়া যাবে জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফলে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে বাজারে কোনও প্রভাব পড়বে না।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, “ভারতীয় পেঁয়াজ ট্রেনে তোলা হয়েছে, একদিনের মধ্যে দর্শনা হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে। ভারতের সঙ্গে যা চুক্তি হয়েছে, সেই পেঁয়াজ আসবে। তাছাড়া ভারত-রাশিয়াসহ বৈশ্বিক বাজারগুলোর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। যার যার জায়গা থেকে সবাই একযোগে কাজ করলে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।”

তিনি বলেন, “সামাজিক নিরাপত্তা প্রোগ্রামের আওতায় সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করছে সরকার। চিনি-তেল ৯০ শতাংশ আমদানিতে নির্ভরশীল। সরকার তা কমানোর চেষ্টা করছে। দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তেলের দাম নির্ধারণ করা সফল হয়েছে।”

এ সময় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে বলেও জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

সেমিনারে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, পণ্যের দাম নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা পুরোপুরি কাজে আসছে না। তেল ও চিনির মতো পুরো আমদানিনির্ভর পণ্যের ক্ষেত্রে দাম নির্ধারণ কিছুটা সফল হলেও অন্য পণ্যের ক্ষেত্রে দাম নির্ধারণ কাজ করছে না।

বাণিজ্যসচিব বলেন, কৃষিপণ্যের দাম বেঁধে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কারণ, এখানে সরবরাহকারী থাকে অনেক। আবার দাম নির্ধারণ করে দিলে প্রতিযোগিতা কমিশনের কোনও কাজ থাকে না। বরং দাম নির্ধারণ না করে প্রতিযোগিতা কমিশনকে আরও কার্যকর করে বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে হবে। প্রয়োজনে নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম তার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন।

তিনি বলেন, “পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে যে সাফল্য পাওয়া যায়, তা দেখা গেছে। রমজানের আগে সয়াবিন তেলের যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল, সেই দামে তেল পাওয়া যাচ্ছে। তবে দুয়েকজন স্মার্ট সরবরাহকারী আছেন, যাদের ব্যাপারে আমাদের নজরদারি আছে।”

এবার রমজান মাসে বাজারে চিনি ও তেলের মতো পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমরা তিন ধরনের পণ্য নিয়ে কাজ করছি। এর মধ্যে একটি আমদানি করা পণ্য। আরেকটা দেশে উৎপাদিত শিল্পপণ্য। অন্যটি পচনশীল পণ্য। এই তিন ধরনের পণ্যের বাজারের গতি আলাদা।”

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হেলাল উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ভোক্তা ও উৎপাদক দুই পক্ষের স্বার্থ দেখতে হবে। কোনও এক পক্ষের স্বার্থ দেখলে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে না। সুতরাং বাজারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ছাড়া যদি কোনও পণ্যের দাম কমেও আসে, তাহলে ভবিষ্যতে তা আরও বাড়তি দামে কিনতে হতে পারে। সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে বাজার পরিচালিত হলে সমস্যা থাকবে না।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, “আমাদের বাজারে অদৃশ্য অনেক বিষয় আছে। অনেক সময় সরবরাহে বড় সংকট না থাকলেও দাম বাড়ে। দেখা যায়, বাজারে ১০০ টাকার বেশি দামে বেগুন কিনতে হচ্ছে। লেবু কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। চাহিদাসংক্রান্ত তথ্যের বড় ঘাটতি রয়েছে।”

বাজারে সিন্ডিকেট থাকতে পারে মন্তব্য করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, অন্যান্য দেশেও এমন সিন্ডিকেট আছে। কিন্তু এই সিন্ডিকেট যেন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে। সিন্ডিকেট যেন উল্টো সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে। সব সমস্যা সমাধান করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে সমাধানের দিকে এগুনো সম্ভব।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ূন রশিদ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত