গত ডিসেম্বরেও এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছিল ১৫০ টাকা। আর এখন চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে আড়তদাররা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ৬৫ টাকায়।
চট্টগ্রাম শহরের খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ পাইকারি বাজারে নিত্যপণ্যটির দাম কমেছে অর্ধেক।
পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা দিলে দেশের বাজারে রাতারাতি নিত্যপণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা। এখন সেই দুরাবস্থা কেটেছে। দেশে উৎপাদিত মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে এসেছে ব্যাপক পরিসরে।
ভারত থেকে সীমিত পরিসরে আমদানির পাশাপাশি পেঁয়াজ আসছে মিয়ানমার, চীন, পাকিস্তান থেকেও। ফলে দাম কমে এসেছে অনেকটা।
যদিও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম এখনো কমেনি। চট্টগ্রামের আড়তগুলোতে এই পেঁয়াজের দাম হাঁকা হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। সে দামে ক্রেতা মিলছে না মোটেও।
ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “জানুয়ারির শুরু থেকেই আমরা পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আভাস পাচ্ছি। প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পেলে আমদানি শুরু করব। আমাদের তো আগে থেকেই ইমপোর্ট পারমিট বা আইপি নেয়া আছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে আমদানি শুরুতে কোনও বাধা নেই।”
ফলন কম হওয়ায় ভারতেই পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। এই অবস্থায় ২০২৩ সালের আগস্টে শুল্কহার ৪০ শতাংশ নির্ধারণ করে দেশটি। এরপরও দামে লাগাম টানতে না পেরে গত অক্টোবরে ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য বাড়িয়ে ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে। তাতেও পুরোপুরি সুফল না পেয়ে ৮ ডিসেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটি; যা ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে বলা হয়।
এই নিষেধাজ্ঞার পর দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম লাগামছাড়া হয়। বাজার ধরতে ভারতের বিকল্প হিসেবে চীন, পাকিস্তান, তুরস্ক, মিশরসহ ১২ দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নেন ব্যবসায়ীরা। এরপর ডিসেম্বর থেকেই পুরোদমে দেশীয় পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করে।
ভারত নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ১৫ দিনের মধ্যে দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসায় তা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত মিলছে। খাতুনগঞ্জ হামিদ উল্লাহ মার্কেটের আড়তদার মোহাম্মদ ইদ্রিস সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এখন ভারতীয় পেঁয়াজ না এলেও দেশীয় পেঁয়াজ দিয়ে আগামী তিন মাসের চাহিদা পূরণ করা যাবে। ফলে দাম নতুন করে বাড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ এলে হুট করেই দাম কমে যাবে।”