অনলাইনে আয়কর পরিশোধের খরচ কমাতে উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, নগদ বা রকেটের মতো মোবাইল আর্থিক সেবা এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধের সার্ভিস চার্জ বা সেবা মাশুল কমানো হয়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ থেকে সব ব্যাংক, এমএফএস এবং ডিজিটাল ওয়ালেটগুলোর (পিএসপি) উদ্দেশে এ–সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
সেখানে কার্ড ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়কর পরিশোধের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাছ প্রতি লেনদেনে ২০ টাকা এবং ২৫ হাজার টাকার বেশি আয়কর পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রতি লেনদেনে ৫০ টাকা সেবা মাশুল নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এমএফএস অথবা পিএসপি ব্যবহারের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধ করা হলে গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া যাবে লেনদেন প্রতি ১ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৩০ টাকা। এর মধ্যে যেটা কম হবে সেটাই আদায় করতে হবে।
এই মাশুলের মধ্যেই মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আলাদা করে কোনও ভ্যাট আদায় করা যাবে না।
এর আগে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ১ দশমিক ৬ শতাংশ সেবা মাশুল আদায় করতে পারত ব্যাংক, এমএফএস ও পিএসপিগুলো। ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবরে ওই নির্দেশনা জারি করা হয়।
সেই হিসেবে সর্বনিম্ন কর ৫ হাজার টাকা অনলাইনে পরিশোধ করতে ভ্যাট ছাড়াই সেবা মাশুল দিতে হতো ৮০ টাকা। ভ্যাটসহ এই খরচ দাঁড়াত ৯২ টাকা।
এই সেবা মাশুলের কারণে আয়করদাতারা অনলাইনে কর পরিশোধে নিরুৎসাহিত হচ্ছিলেন এমন কারণ দেখিয়ে তা কমানোর জন্য গত ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের কাছে একটি চিঠি দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
ওই চিঠিতে বলা হয়, এত বেশি সেবা মাশুলের কারণে ইলেকট্রনিক পদ্ধতির রিটার্নে (ই-রিটার্ন) আয়কর পরিশোধ কার্যক্রম প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। অনলাইনে আয়কর পরিশোধের মাশুল হতে পারে সর্বোচ্চ ২০ টাকা।
চিঠি পাঠানোর ১৭ দিন পর নতুন নির্দেশনা জারি করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি ২০২৪-২৫ কর বছরের আয়কর রিটার্ন দাখিল ও কর পরিপালন সহজ করার জন্য এনবিআর গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি উন্মুক্ত করেছে। অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্য করতে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনা রয়েছে। এনবিআরের চিঠিতে এসব কথাও বলা হয়েছে।
এনবিআর ৫১ কোটি টাকা খরচ করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার পদ্ধতি ২০১৬ সালে চালু করেছিল। করদাতাদের আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় ২০১৯ সালে সংস্থাটি ওই পদ্ধতি বন্ধ করে দেয়। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের নভেম্বরে এনবিআর নিজের জনবল দিয়ে দুই কোটি টাকা খরচ করে নতুন পদ্ধতি চালু করে। এটি পদ্ধতিটিই চলমান রয়েছে।