স্বচ্ছতার সঙ্গে রাজস্ব আদায় নিশ্চিতে অনলাইনে রিটার্ন গ্রহণ শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সেমাবার থেকে চলতি করবর্ষে ব্যক্তিশ্রেণির কর দাতাদের কাছ থেকে অনলাইনে রিটার্ন গ্রহণ শুরু হয়েছে।
এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিআর সদস্য (কর নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত) মো. আলমগীর হোসেন।
তিনি বলেন, “প্রতিবছর ব্যক্তি পর্যায়ের আয়কর আইন ও হার পরিবর্তন হয়। তাই প্রতিবছরই সফটওয়্যারে কিছু পরিবর্তন আসে। এবছরও ওই পরিবর্তন করে সহজ পদ্ধতিতে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল শুরু হয়েছে।”
চলতি অর্থবছরে ২০২৩-২৪ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন জমা নেওয়া হচ্ছে। এনবিআর আর www.etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইটে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
তিনি বলেন, “অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে গিয়ে কোনও ধরনের সমস্যায় পড়লে তার সমাধান দেওয়ার জন্য এবার একটি কল সেন্টারও স্থাপন করা হচ্ছে। এই কল সেন্টার বুধবার থেকেই কার্যকর হবে।”
করদাতারা রিটার্ন দাখিল করার সময় আইন এবং কারিগরি কোনও কিছু না বুঝে থাকলে তারা কল সেন্টারে কল করলেই সমাধান পাবেন। সেই কল সেন্টারে দিনে ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ছয় জন কর্মকর্তা ডিউটি করবেন।
মঙ্গলবার অনলাইন রিটার্ন দাখিল নিয়ে এনবিআর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠান হবে, সেখানে থাকবেন অর্থ উপদেষ্টার ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেই অনুষ্ঠানে কল সেন্টারের নম্বর জানানো হবে।
চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেটে সরকার এনবিআরের আওতায় ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।
অনলাইনেই সিংহভাগ আয়কর রিটার্ন গ্রহণের লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করে আলমগীর হোসেন বলেন, “গত অর্থবছরে প্রায় ৫ লাখ ২৬ হাজার আয়কর রিটার্ন গ্রহণ করা হয়েছে। এবার আমরা সেটা দশ লাখের কাছাকাছি নিয়ে যেতে চাই।”
এনবিআরের সদস্য আলমগীর হোসেন মনে করেন, অনলাইনে বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যত বেশি রিটার্ন দাখিল করা হবে, স্বচ্ছতা ততই নিশ্চিত হবে।
বর্তমানে দেশে প্রায় ১ কোটি ২১ লাখের বেশি করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর- টিআইএন নম্বর রয়েছে।
অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সময় অনলাইন ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ, বিকাশ, রকেট বা যেকোনও এমএফএসের মাধ্যমে কর পরিশোধ করা যাবে।
রিটার্ন দাখিল সম্পন্ন হলে তাৎক্ষণিক প্রমাণপত্র প্রাপ্তি, আয়কর পরিশোধ সনদ ও টিআইএন সনদ প্রাপ্তি, পূর্ববর্তী কর বছরের দাখিল করা ই-রিটার্নের কপি ও রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ ডাউনলোডের সুবিধা পাওয়া যাবে।
এনবিআর ২০২১ সালে এই সিস্টেম চালু করার পর ২০২১-২২ কর বছরে ৬১ হাজার ৪৯১ জন, ২০২২-২৩ কর বছরে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮১ জন এবং ২০২৩-২৪ কর বছরে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৭ জন করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করেন।