প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিজস্ব অ্যালার্ট-৪ জারি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম রবিবার বেলা ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বন্ধ রেখেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বন্দর ও আশপাশের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় ৬ নম্বর বিপদসংকেত ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রাতে অ্যালার্ট-২ জারি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
পরদিন রবিবার সকাল ৯টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বন্দর ও আশপাশের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় ৯ নম্বর বিপদসংকেত ঘোষণা করলে সংকেত পাল্টিয়ে অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয়।
এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে ও বাইরে পণ্য ওঠানামার সব ধরনের কাজ বন্ধ থাকবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দরের ভেতর জেটিতে থাকা জাহাজগুলোকে বহির্নোঙরে নিরাপদে চলে যেতে বলেছে। আর বহির্নোঙরে থাকা সব ধরনের জাহাজকে নিরাপদে থেকে ইঞ্জিন সচল রাখতে বলেছে।
এছাড়া জেটি ও টার্মিনালে থাকা বড় যন্ত্রগুলোকে গুটিয়ে ঝুঁকি থেকে বাঁচার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা এরই মধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “জেটিতে থেকে সব জাহাজ বহির্নোঙরে সাগরে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে শুরু করেছে। আর জেটিতে সব অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ আছে। সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে।”
ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষতি থেকে বাঁচতে চট্টগ্রাম বন্দরের মতো দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ বিমানবন্দর চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
বিমানবন্দরটির পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “রবিবার বেলা ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের নির্দেশনা দেখে পরবর্তী ঘোষণা দেওয়া হবে।”
ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। উপকূলীয় এবং সাগর তীরবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছেড়ে যেতে করপোরেশনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়া খোলা হয়েছে জরুরি কন্ট্রোল রুম।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বলেন, “রেমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। রেমালের ঝুঁকি না কমা পর্যন্ত কন্ট্রোল রুম থেকে নাগরিকদের তথ্য সেবা দেওয়া হবে।
“এছাড়া আমরা রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিং শুরু করেছি, যাতে ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকরা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। জরুরি প্রয়োজনে শুকনো খাবারের ত্রাণও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।”