দেশের সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে কোন প্রক্রিয়ায় এই বিবরণী জমা দিতে হবে সে বিষয়ে কোনও স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বেঁধে দেওয়া হয়নি সময়ও।
১৯৭৯ সাল থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব পাঁচ বছর পরপর জমা দেওয়ার বিধান চালু হয়। তবে এর কার্যকারিতা সেভাবে কখনও দেখা যায়নি।
২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার মধ্যে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারি চাকুরেদের তাদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আমলেও হিসাব জমা দিতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও খুব একটা সাড়া মেলেনি।
সরকারি কর্মচারীদের আয়কর বিবরণীতে তাদের সম্পদের তথ্য থাকার বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়। তবে এমন অভিযোগও আছে, সরকারি কর্মচারীদের কেউ কেউ এনবিআরে জমা দেওয়া বিবরণীতে প্রকৃত সম্পদের তথ্য দেখান না, বেনামে সম্পদ লুকিয়ে রাখেন।
চলতি বছর পুলিশ ও রাজস্ব বোর্ডের একের পর এক কর্মকর্তার বিত্ত-বৈভবের খবর ফাঁস হওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে গত ১ জুলাই হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়।
সুবীর নন্দী দাস নামে এক আইনজীবীর করা ওই আবেদনে সরকারি চাকরি বিধির ১৩ (১)(২) অনুসারে সব সরকারি কর্মচারীর স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পদের হিসাব দাখিল এবং তা প্রকাশের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
একই সঙ্গে এই বিধি অনুসারে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিল ও প্রকাশ এবং দুর্নীতির প্রতিরোধে যথাযথ আইন প্রণয়ন করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
এই আবেদনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, এনবিআর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছিল। দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আবেদনটির আর শুনানি হয়নি।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী সুবীর দাস সেসময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আপনারা জানেন সম্প্রতি সরকারি কর্মচারীদের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। একজন সরকারি কর্মচারী এত অল্প সময়ে কীভাবে এত সম্পত্তি অর্জন করেন, আমরা সেটি জানতে চেয়েছি।”
চাকরি বিধি অনুসারে সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনও সরকারি কর্মচারী একটি ভবনও নির্মাণ করতে পারেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারপরও কীভাবে তারা এত সম্পত্তি অর্জন করলেন?”