Beta
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

এ বছর নির্বাচন আয়োজন কঠিন হতে পারে : নাহিদ

নাহিদ ইসলাম। প্রতিকৃতির গ্রাফিক্স: সকাল সন্ধ্যা ক্রিয়েটিভ টিম।
নাহিদ ইসলাম। প্রতিকৃতির গ্রাফিক্স: সকাল সন্ধ্যা ক্রিয়েটিভ টিম।
[publishpress_authors_box]

অন্তর্বর্তী সরকার অস্থিরতার মধ্যেও বছরের শেষ দিকে সাধারণ নির্বাচনের আভাস দিলেও তা আয়োজন করা কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কাণ্ডারি নাহিদ ইসলাম।

রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখনও জননিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেনি। এ বছর সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হতে পারে।

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যারা সংবিধানসহ নানা ক্ষেত্রে সংস্কারকে অগ্রাধিকার নিয়ে কাজ করছে।

তবে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল ন্যূনতম সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের ওপর জোর দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে চলতি মাসে অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, অস্থিরতা চললেও ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ নির্বাচন হতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা বিবিসিকে সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করতে চাওয়ার কথা জানিয়ে বলেছেন, বিষয়টা নির্ভর করবে তার সরকার অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কত দ্রুত করতে পারবে, তার ওপর।

বিবিসি বৃহস্পতিবার ড. ইউনূসের ওই সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে। একই দিন রয়টার্স প্রকাশ করেছে নাহিদ ইসলামের সাক্ষাৎকার, যিনি কয়েকদিন আগে এনসিপির দায়িত্ব নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন।

অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং তার মধ্য থেকে গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক কমিটির কয়েক মাসের প্রচেষ্টার ফল এনসিপি।

এনসিপির প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে ২৬ বছর বয়সী নাহিদ ইসলাম রয়টার্সকে, “গত সাত মাসে আমরা সবাই ন্যূনতম সংস্কারের মাধ্যমে পুলিশিং ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার প্রত্যাশা করেছিলাম। এটা একটা মাত্রায় হলেও আমাদের প্রত্যাশামতো হয়নি।”

তিনি বলেন, “বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পুলিশিং ব্যবস্থায় আমি মনে করি না একটা জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।”

রয়টার্স বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্যসাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামই প্রথম রাজনীতিক, যিনি নির্বাচন আয়োজন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া সময়সীমা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করলেন।

রাজনৈতিক বিশ্বেষকরা মনে করছেন, নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বাধীন তরুণদের দলটি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে; যে রাজনীতিতে কয়েক দশক ধরে আধিপত্য বজায় রেখেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগ এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

এসব দল আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলছে, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অস্থিরতার যেসব ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে আছে হাসিনার সরকারের ‘বিভিন্ন প্রতীকে’ হামলা এবং ছাত্রদের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে হিন্দুসহ অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলার খবরও আছে; যদিও অন্তর্বর্তী সরকার এসব খবরকে বলছে অতিরঞ্জিত।

নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন যখনই হোক সেজন্য প্রস্তুত থাকবে তাদের দল এনসিপি, যে দল গত সপ্তাহেই গঠিত হয়েছে।

অবশ্য তিনি আরও বলেছেন, নির্বাচনের আগে কথিত ‘জুলাই বিপ্লবের প্রোক্লেমেশন’ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো ‘কঠিন’ হতে পারে; এটা এমন একটা সনদ হবে যেটা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তৈরির পরিকল্পনা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

জুলাই অভ্যুত্থানকে বিপ্লব বলে আসছে অভ্যুত্থানের নেতারা। ১৭৮৯ সালের ফরাসি বিপ্লবের পর সেকেন্ড রিপাবলিক গঠনের মতো এখন রাষ্ট্রক্ষমতার বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা তাদের লক্ষ্য।

রয়টার্স বলছে, এই সনদে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকবে। পাশাপাশি থাকবে গত বছরের সহিংসতায় প্রাণ হারানো এক হাজার মানুষের প্রতি সম্মান জানানোর বিষয়।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা এক মাসের মধ্যে সনদ নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছতে পারলে দ্রুত নির্বাচনের দেওয়ার কথা বলতে পারব। তবে সময় আরও বেশি লাগলে নির্বাচনও বিলম্বিত হবে।”

তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অনেক সম্পদশালী ব্যক্তি তাদের দলকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করছেন। তারা দলের নতুন কার্যালয় ও নির্বাচনের তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে শিগগির ‘ক্রাউডফান্ডিং’ এ (সাধারণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ) যাবেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত