Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমরা কি ভুল জানি

Universe_Dark_Energy_Inflation_1
[publishpress_authors_box]

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে সংগৃহীত নতুন তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, মহাবিশ্বের সমস্ত রহস্য ব্যাখ্যা করতে একটি নতুন মহাজাগতিক বৈশিষ্ট্য বা উপাদান প্রয়োজন হতে পারে, যার ধারণা এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। বিজ্ঞানীরাও মনে করছেন, বর্তমান জ্যোতির্বিজ্ঞানের ধারণাগুলো মহাবিশ্বের প্রকৃতি পুরোপুরি বোঝার জন্য যথেষ্ট নয়।

বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর একটি ‘ডার্ক এনার্জি’র অস্তিত্ব সম্ভবত বাস্তবে নেই। মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের রহস্য সমাধানে গবেষণায় নিয়োজিত বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ‘মান্থলি নোটিসেস অব দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি লেটার্স’ জার্নালে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।

গত ১০০ বছর ধরে পদার্থবিজ্ঞানীরা সাধারণত ধারণা করে আসছিলেন যে, মহাবিশ্ব সব দিকেই সমানভাবে ও সমান গতিতে প্রসারিত হচ্ছে। আর এই সম্প্রসারণের পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করছে ডার্ক এনার্জি বা অজানা এক শক্তি।

এই তত্ত্ব সবসময়ই বিতর্কিত ছিল। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের ক্যান্টারবেরি ইউনিভার্সিটির একদল বিজ্ঞানীও উন্নত সুপারনোভা লাইট কার্ভ বিশ্লেষণ ব্যবহার করে প্রচলিত এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছেন।

তাদের গবেষণা দেখাচ্ছে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ আরও বৈচিত্র্যময় এবং ‘অসম’। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ থেকে প্রাপ্ত নতুন সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তারা ‘টাইমস্কেপ হাইপোথিসিস’ নামে একটি নতুন মডেল প্রস্তাব করেছেন। এই মডেলে ডার্ক এনার্জি বলে কিছু নেই।

এই তত্ত্ব মতে, আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে প্রসারণের পার্থক্যও মহাবিশ্বের ত্বরান্বিত সম্প্রসারণের কারণে হয় না বরং আমরা কীভাবে সময় এবং দূরত্ব ক্রমাঙ্কিত (calibrate) করি, তার ফলাফল।

আমরা জানি মাধ্যাকর্ষণ সময়কে ধীর করে। তাই ঘড়ির কাঁটা মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের ভেতরের তুলনায় খালি মহাকাশে দ্রুত টিকটিক করে।

মডেলটি বলছে, আকাশগঙ্গা গ্যালাক্সিতে থাকা ঘড়িটি মহাবিশ্বের বিশাল শূন্যস্থানগুলোর গড় অবস্থানে থাকা একই ঘড়ির তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ ধীরে ঘুরবে। এর মানে হলো, আমাদের গ্যালাক্সির তুলনায় ওই শূন্যস্থানগুলোতে আরও কয়েক বিলিয়ন বছর কেটে গেছে।

তার মানে এই শূন্যস্থানগুলোতে স্থান-কালের (স্পেস-টাইম) সম্প্রসারণের গতিও বেশি এবং এই শূন্যস্থানগুলো আরও দ্রুত বড় হচ্ছে। এ থেকে ধারণা হতে পারে যে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণও দ্রুততর হচ্ছে।

গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া অধ্যাপক ডেভিড উইল্টশায়ার বলেছেন, “আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের গতি কেন ত্বরান্বিত হচ্ছে, তা ব্যাখ্যার জন্য ডার্ক এনার্জির ধারণার দরকার নেই।

“ডার্ক এনার্জি আসলে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের গতিজনিত শক্তির বৈচিত্র্য ভুলভাবে চিহ্নিত করার ফল, যা আমাদের অসমান মহাবিশ্বে একরকম নয়।”

তিনি আরও বলেন, “এই গবেষণা মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে।

“নতুন তথ্যের ভিত্তিতে, এই দশকের শেষ নাগাদ মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় রহস্যটির সমাধান হতে পারে।”


ডার্ক এনার্জিকে সাধারণত মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীত একটি দুর্বল বল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ধারণা করা হয় এটি বস্তু থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করে এবং মহাবিশ্বের ঘনত্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই এটি দিয়ে গঠিত। মহাবিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ ডার্ক এনার্জি দিয়ে গঠিত বলেই মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

জ্যোতির্বিজ্ঞানে প্রচলিত ‘ল্যাম্বডা কোল্ড ডার্ক ম্যাটার’ (ΛCDM) মডেলে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের গতিবৃদ্ধি ব্যাখ্যা করতে ডার্ক এনার্জির প্রয়োজন হয়।

বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন সুদূর গ্যালাক্সিগুলোর সুপারনোভা বিস্ফোরণের দূরত্ব পরিমাপ করে। পরিমাপে দেখা গেছে, এগুলো প্রত্যাশার তুলনায় অনেক দূরে। এতে বোঝায় যে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ দ্রুততর হচ্ছে।

তবে, মহাবিশ্বের বর্তমান সম্প্রসারণের হার নিয়ে নতুন পর্যবেক্ষণে প্রাপ্ত তথ্যের ফলে ক্রমাগত প্রশ্ন উঠছে।

প্রথমত, বিগ ব্যাংয়ের পরবর্তী আলোড়ন বা ‘কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড’ (সিএমবি) থেকে প্রাপ্ত প্রমাণ দেখায় যে, প্রাথমিক মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হারের চেয়ে বর্তমান সম্প্রসারণের হার অনেক বেশি। এই অসঙ্গতি ‘হাবল টেনশন’ নামে পরিচিত।

এছাড়াও, সম্প্রতি ডার্ক এনার্জি স্পেকট্রোস্কোপিক ইন্সট্রুমেন্ট (DESI) দিয়ে উচ্চ-নির্ভুল তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ‘ল্যাম্বডা কোল্ড ডার্ক ম্যাটার’ (ΛCDM) মডেলটি সেই মডেলগুলোর সঙ্গে খাপ খায় না, যেখানে ডার্ক এনার্জি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থির না থেকে ‘বিবর্তিত’ হয়।

হাবল টেনশন এবং ডার্ক এনার্জি স্পেকট্রোস্কোপিক ইন্সট্রুমেন্ট (DESI) থেকে পাওয়া বিস্ময়কর তথ্যগুলো ১০০ বছর পুরনো সরলীকৃত মহাজাগতিক সম্প্রসারণ সূত্র তথা ফ্রিডম্যানের সমীকরণ ব্যবহার করে সমাধান করা কঠিন।

এই সমীকরণ ধরে নেয় যে, গড়পড়তা মহাবিশ্ব একই রকমভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে, যেন মহাজাগতিক সবকিছু ব্লেন্ডারে মিশিয়ে একটি সমতল স্যুপ বানানো হয়েছে, যেখানে কোনো জটিল কাঠামো নেই।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, বর্তমান মহাবিশ্ব একটি জটিল মহাজাগতিক জালের মতো। এটি গ্যালাক্সির ক্লাস্টার, পাত ও ফিলামেন্ট দিয়ে তৈরি, যা বিশাল শূন্যস্থানগুলোতে ছড়িয়ে আছে।

অধ্যাপক উইল্টশায়ার বলেন, “আমাদের কাছে এখন এত তথ্য আছে যে, একবিংশ শতাব্দীতে এসে আমরা অবশেষে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি— জটিলতা থেকে কীভাবে এবং কেন একটি সরল গড় সম্প্রসারণ সূত্র আসে?

“আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি সরল সম্প্রসারণ সূত্রকে ফ্রিডম্যানের সমীকরণ মানতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।”

গবেষকরা বলেছেন, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার ইউক্লিড স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে ফ্রিডম্যান সমীকরণ এবং টাইমস্কেপ হাইপোথিসিস যাচাই ও আলাদা করা যাবে।

ইউক্লিড স্যাটেলাইট ২০২৩ সালের জুলাইয়ে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। তবে এর জন্য অন্তত ১,০০০টি স্বতন্ত্র ও উচ্চমানের সুপারনোভার পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন হবে।

২০১৭ সালে সর্বশেষ পরীক্ষায় দেখা যায়, টাইমস্কেপ মডেলটি ΛCDM মডেলের তুলনায় মহাজাগতিক সম্প্রসারণের কিছুটা ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারে।

এ কারণে ক্রাইস্টচার্চের গবেষক দলটি প্যানথিয়ন প্লাস সহযোগী দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে। এই দলটি ১,৫৩৫টি স্বতন্ত্র সুপারনোভার একটি বিস্তারিত ক্যাটালগ প্রস্তুত করেছে।

তারা বলেছেন, নতুন তথ্য টাইমস্কেপ মডেলের জন্য এখন ‘অত্যন্ত শক্তিশালী প্রমাণ’ সরবরাহ করছে। এটি হাবল টেনশন এবং মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ সম্পর্কিত অন্যান্য অসঙ্গতিগুলোর একটি সম্ভাব্য সমাধানেরও পথ দেখাতে পারে।

গবেষকরা আরও বলেন, টাইমস্কেপ মডেলের সমর্থনে প্রমাণ আরও জোরালো করতে ইউক্লিড এবং ন্যান্সি গ্রেস রোমান স্পেস টেলিস্কোপের অতিরিক্ত পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।

এখন মহাজাগতিক সম্প্রসারণ এবং ডার্ক এনার্জির আসল প্রকৃতি উন্মোচনের জন্য নতুন তথ্যের এই বিশাল ভাণ্ডার কাজে লাগানোর দৌড় শুরু হয়েছে।


মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার নিয়ে নতুন তথ্য

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ নিয়ে আরেকটি গবেষণায়ও বিষয়টি উঠে এসেছে। ওই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন, ব্লুমবার্গ ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর এবং জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী অ্যাডাম রিস।

তিনি বলেন, “পর্যবেক্ষণে ধরা পড়া মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের গতি ও হার এবং স্ট্যান্ডার্ড মডেলের পূর্বাভাসের মধ্যে অমিল দেখায় যে, মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ধারণা অসম্পূর্ণ হতে পারে।

“নাসার প্রধান দুটি টেলিস্কোপ এখন একে অপরের ফলাফল নিশ্চিত করার পর, আমাদের এই [হাবল টেনশন] সমস্যাটি খুব গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিৎ। এটি একটি চ্যালেঞ্জ তবে একই সঙ্গে তা মহাবিশ্ব সম্পর্কে আরও জানতে একটি অসাধারণ সুযোগও।”

দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা রিসের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আবিষ্কারের ওপর ভিত্তি করে করা হয়। অ্যাডাম রিস দেখিয়েছিলেন যে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ গতি আগের চেয়ে অনেক বাড়ছে। আর এর পেছনে রয়েছে ডার্ক এনার্জি।

স্ট্যান্ডার্ড মডেল অনুযায়ী, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের গতি প্রায় ৬৭-৬৮ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড প্রতি মেগাপারসেক (km/s/Mpc), যা হাবল কনস্ট্যান্ট তথা হাবল ধ্রুবক নামে পরিচিত। কিন্তু বাস্তবে টেলিস্কোপ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে ৭০ থেকে ৭৬ এর মধ্যে একটি উচ্চ মান পাওয়া যায়, যার গড় ৭৩ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড প্রতি মেগাপারসেক।

এই অমিল মহবিশ্ব তত্ত্ববিদদের জন্য গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ধাঁধা হয়ে আছে। কারণ ৫-৬ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড প্রতি মেগাপারসেক পার্থক্য পরিমাপ বা পর্যবেক্ষণের কৌশলে ভুলের কারণে হতে পারে না। এটা অসম্ভব।

কারণ, মেগাপারসেক এক বিরাট দূরত্ব। প্রতি মেগাপারসেক ৩.২৬ মিলিয়ন আলোকবর্ষের সমান, এবং এক আলোকবর্ষ হল সেই দূরত্ব যা আলো এক বছরে পাড়ি দেয়— ৯.৪ ট্রিলিয়ন বা ৯ লাখ ৪০ হাজার কোটি কিলোমিটার।

রিসের গবেষক দল বলেছে, যেহেতু জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের নতুন ডেটা হাবলের পরিমাপের মধ্যে বড় ধরনের ভুলের সম্ভাবনা বাতিল করেছে, তাই হাবল টেনশন সম্ভবত পদার্থবিজ্ঞানে এখনও অজানা কোনও কারণের ফলাফল। যার ধারণাও আমাদের কাছে নেই।

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের ছাত্র সিয়াং লি বলেন, “জেমস ওয়েব থেকে তোলা ছবিতে মহাবিশ্বকে প্রথমবারের মতো হাই ডেফিনিশনে দেখার সুযোগ হয়। এটি পরিমাপগুলোর সিগন্যাল-টু-নয়েজ অনুপাতও যথেষ্ট উন্নত করেছে।”


হাবল ধ্রুবক আমাদের সৌরজগত, পৃথিবী, বা দৈনন্দিন জীবনে কোনও প্রভাব ফেলে না। তবে এটি মহাবিশ্বের বিবর্তনকে প্রকাশ করে। মহাকাশের বিশাল অংশ নিজে নিজে প্রসারিত হচ্ছে এবং দূরবর্তী গ্যালাক্সিগুলোকে একে অপর থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। একটি বেলুনকে ফোলালে যেভাবে এর সম্প্রসারণ হয় এবং একটি বিন্দু থেকে অপর বিন্দুটি দূরে সরে যায়।

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মান যা বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের গঠন চিত্রিত করতে, মহাবিশ্বের ১৩-১৪ বিলিয়ন বছর পরবর্তী অবস্থা সম্পর্কে তাদের বোঝাপড়া গভীর করতে এবং মহাকাশের অন্যান্য মৌলিক দিকগুলো পরিমাপ করতে ব্যবহার করেন।

জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির কসমোলজিস্ট মার্ক কামিওনকোভস্কি বলেন, হাবল টেনশন সমাধান করলে বিজ্ঞানীরা স্ট্যান্ডার্ড মডেলের সঙ্গে সম্পর্কিত আরও অমিলের প্রতি নতুন অন্তর্দৃষ্টি পেতে পারেন, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামনে এসেছে।

কামিওনকোভস্কি হাবল ধ্রুবক পরিমাপ করতে সহায়তা করেছেন এবং সম্প্রতি হাবল টেনশন নিয়ে একটি নতুন ব্যাখ্যা তৈরিতে সহায়তা করেছেন।

স্ট্যান্ডার্ড মডেলটি পদার্থবিজ্ঞানের বর্তমান জানা সূত্রগুলোর ভিত্তিতেই গ্যালাক্সির বিবর্তন, মহাবিশ্বের মহাজাগতিক মাইক্রোওয়েভ পটভূমি (বিগ ব্যাং থেকে), মহাবিশ্বে রাসায়নিক উপাদানের প্রাচুর্য এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ব্যাখ্যা করে।

তবে এটি ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জির প্রকৃতি পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারে না। মহাবিশ্বের ৯৬ শতাংশই ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জি দিয়ে গঠিত এবং মহাবিশ্বের ত্বরান্বিত সম্প্রসারণের জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হয়।

কামিওনকোভস্কি বলেন, “হাবল টেনশনের একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে, প্রাথমিক মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ধারণায় হয়তো কোনও ফাঁক-ফোকর রয়ে গেছে। তা হতে পারে একটি নতুন পদার্থ বা বস্তুগত উপাদান— প্রাথমিক ডার্ক এনার্জি— যা বিগ ব্যাংয়ের পর মহাবিশ্বকে একটি অপ্রত্যাশিত ধাক্কা দিয়েছিল।

“এছাড়াও আরও কিছু ধারণা রয়েছে, যা এই সমস্যা সমাধান করতে পারে। যেমন, ডার্ক ম্যাটারের অদ্ভুত গুণাবলী, এক্সোটিক কণা, পরিবর্তিত ইলেকট্রনের ভর, বা প্রাথমিক চৌম্বক ক্ষেত্র। তাত্ত্বিকদের আরও সৃজনশীল হতে হবে।”

তথ্যসূত্র : ফিজিক্স ডটওআরজি, স্পেস ডটকম, হাব ডট জেএইচইউ ডট এডু

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত